কৃষককে হাত-পা বেঁধে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

বাকেরগঞ্জ (বরিশাল) প্রতিনিধি
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭:৪৪
শেয়ার :
কৃষককে হাত-পা বেঁধে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

বরিশালের বাকেরগঞ্জে সোহেল খান (৩৫) নামে এক কৃষককে হাত-পা বেঁধে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। 

গতকাল শনিবার রাত ১১টার দিকে উপজেলার কবাই ইউনিয়নের উত্তর কবাই গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতের পরিবারের দাবি, পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের লোকজন সোহেলকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেন। 

জানা গেছে, নিহত কৃষক সোহেল খান উপজেলার কবাই ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের উত্তর কবাই গ্রামের নূর ইসলাম হাওলাদারের ছেলে।

নিহতের স্ত্রী সাজেদা বেগম জানান, ১৫ দিন আগে তার বাচ্চা হয়েছে। সেজন্য তিনি শনিবার বাবার বাড়িতে ছিলেন। ওইদিন রাত ১১টার সময় একই গ্রামের শাহিন হাওলাদার তার স্বামী সোহেল খানকে লোক মারফত বাড়ি থেকে ডেকে নেন। এরপর রাত ১২টার দিকে বাড়ির পার্শ্ববর্তী মসজিদের সামনে নিয়ে তাকে হাত-পা বেঁধে পিটিয়ে হত্যা করেন। পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডকে ধামাচাপা দিতে রাত ১টার সময় মসজিদের মাইকে এলাকায় ডাকাত পড়েছে বলে প্রচার চালিয়ে মব সৃষ্টি করেন তারা। সকালে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

হত্যাকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান, তরমুজ চাষের জন্য গত বছর তার স্বামী সোহেল খানের কাছ থেকে উত্তর কবাই গ্রামের মন্নান হাওলাদারের পুত্র শাহিন হাওলাদার চরকবাইতে তাদের কয়েক বিঘা জমি লিজ নেন। এ বছর ওই জমি লিজ না দিয়ে তার স্বামী নিজে চাষাবাদ করে। এ ঘটনায় শাহীন হাওলাদার ১৫০-২০০ মহিষ এনে তাদের চাষাবাদের জমির ফসল নষ্ট করেন। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে শনিবার রাতে শাহিন হাওলাদার পরিকল্পিতভাবে মব সৃষ্টি করে তার স্বামীকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে হাত পা বেঁধে পিটিয়ে হত্যা করেন। তিনি তার স্বামীর হত্যাকাণ্ডের বিচার চান। 

নিহতের কন্যা ৭ম শ্রেণিতে পড়ুয়া ফাতিমা আক্তার জানান, তার পিতা একজন কৃষক। তিনি ডাকাত নন। অথচ তরমুজ চাষের জমি লিজ না দেওয়ায় শাহিন হাওলাদাররা এলাকায় মব সৃষ্টি করে পরিকল্পিতভাবে তার পিতাকে হত্যা করেছেন। কান্নাজড়িত কন্ঠে প্রশ্ন রাখেন পিতার মৃত্যুর পর তার মা এবং তাদের ৫ ভাই বোনের দায়িত্ব কে নেবে? 

বাকেরগঞ্জ থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘রবিবার দিবাগত রাত পৌনে ৪টার সময় ৯৯৯ থেকে একটি কল আসে চরকবাই গ্রামে একজন ডাকাত আটকে রাখা হয়েছে। উক্ত সংবাদ পেয়ে আমিসহ থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় সোহেলের মরদেহ উদ্ধার করি। মরদেহ উদ্ধার করে পোস্টমর্টেমের জন্য বরিশালে শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’

তিনি জানান, অপরদিকে নিহতের পরিবারের দাবি, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে স্থানীয় শাহীন হাওলাদার পরিকল্পিতভাবে সোহেল খানকে হত্যা করেছেন। দুইটি বিষয় গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।