বাংলাদেশে পুশইন করা ৬ ভারতীয়কে ফেরাতে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ
বাংলাদেশে পুশইন করা ৬ ভারতীয় নাগরিককে ৪ সপ্তাহের মধ্যে নিজ দেশে ফেরত নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। আজ শুক্রবার দুই পরিবারের সদস্যদের দায়ের করা রিটের শুনানি শেষে আদালত এ নির্দেশ দেন।
গত ২৬ জুন কুড়িগ্রাম সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ ওই ছয়জনকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠায়। পরে গত ২০ আগস্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার আলীনগর ভুতপুকুর এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে তাদের আটক করে পুলিশ। আটকরা কলকাতার বীরভূমের বাসিন্দা।
আটক ৬ ভারতীয় নাগরিকরা হলো পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার মুরারাই থানার বাসিন্দা দানেশ (২৮), সোনালী খাতুন (২৬), সুইটি বিবি (৩৩), কুরবান সেখ (১৬) ও ইমাম দেওয়ান (৬) এবং মো. সাব্বির শেখ (৮)।
আটকরা বাংলাদেশ পুলিশের কাছে জানিয়েছিল তারা ভারতীয় নাগরিক। তারা দিল্লিতে ইটভাটায় কাজ করত। ভারতীয় পুলিশ তাদের জোর করে আটক করে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠায়। তারা যে ভারতীয় নাগরিক এবং সপক্ষে তাদের আধার কার্ড, রেশন কার্ডসহ সব ডকুমেন্ট থাকা সত্ত্বেও ভারতীয় পুলিশ তাদের জোর করে বাংলাদেশি বানানোর চেষ্টা করে এবং পুশইন করে। এ রকম দুর্বিষহ অবস্থায় তারা ভারতে ফেরার দাবি জানিয়েছিলেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পুলিশ সুপার রেজাউল করিম জানান, আটক ৬ ভারতীয় নাগরিককে বিজিবির মাধ্যমে পতাকা বৈঠকের মধ্য দিয়ে বিএসএফের কাছে হস্তান্তরের অনুরোধ জানালেও, বিএসএফ তাতে রাজি না হয়নি। পরে তাদের বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে মামলা করা হয় এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ কারাগারে পাঠান হয়। এদের মধ্যে সোনালি খাতুন অন্তঃসত্ত্বা। বর্তমানে তারা চাঁপাইনবাবগঞ্জ কারাগারে আছেন।
এদিকে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল ওদুদ জানান, গত ২৫ সেপ্টেম্বর তাদের ভারতীয় নাগরিক হিসেবেই এই মামলার চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। আগামী ৫ অক্টোবর দাখিল করা অভিযোগ পত্রের ওপর শুনানি গ্রহণের দিন ধার্য করেছে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। আসামিরা আদালতে দোষ স্বীকার করলে যে পরিমাণ সাজা তা বহাল রেখে পুশব্যাকের মাধ্যমে তাদের দেশে ফেরত পাঠানো সম্ভব হবে।
মানবাধিকারকর্মী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ সনাকের সভাপতি মো. সাইফুল রেজা কলকাতা হাইকোর্টের এই রায়কে ন্যায়সঙ্গত উল্লেখ করে জানান, দ্রুত উভয় দেশের রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে আলাপচারিতার মাধ্যমে (ভারতীয় হাইকমিশনের মাধ্যমে) তাদের দেশে ফেরত পাঠানো উচিত। সে ক্ষেত্রে অমানবিক এই ঘটনার জন্য ভারতীয় সরকারের দুঃখ প্রকাশ এবং বাংলাদেশ সরকারের প্রতিবাদ করা ও একই সঙ্গে প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে চার্জশিটকে; চার্জশিট হিসেবে বিবেচনা না করে তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর সুযোগ করে দিতে পারে।