‘ব্রিট কার্ড’ হতে যাচ্ছে বৃটেনের জাতীয় পরিচয়পত্র
অবৈধ অভিবাসন রোধে যুক্তরাজ্যে কর্মক্ষম প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য বাধ্যতামূলক ডিজিটাল পরিচয়পত্র বা ‘ব্রিট কার্ড’ চালুর ঘোষণা দিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টার্মার। গতকাল শুক্রবার তিনি এ পরিকল্পনা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেন। তবে প্রস্তাবটি নিয়ে ইতোমধ্যেই গোপনীয়তা রক্ষাকারী সংগঠন ও রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ডিজিটাল আইডি থাকার ফলে দেশে কারা বৈধভাবে কাজ করছে, তা সহজে চিহ্নিত করা যাবে। এতে অবৈধ অভিবাসী দমন, বেআইনি ভাড়া দেওয়া বন্ধ এবং শোষণমূলক কর্মসংস্থান প্রতিরোধ সহজ হবে। সরকারের ধারণা, টনি ব্লেয়ারের আমলে আইডি কার্ড পরিকল্পনা বাতিল হওয়ার পর জনগণের দৃষ্টিভঙ্গি এখন বদলেছে।
নতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাবানা মাহমুদ এ পরিকল্পনার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। স্টার্মারও সম্প্রতি জানিয়েছেন, ডিজিটাল আইডি চালু হলে ব্রিটেন অবৈধ অভিবাসীদের কাছে কম আকর্ষণীয় হবে। ফ্রান্স দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাজ্যে পরিচয়পত্র না থাকার বিষয়টিকে অভিবাসন বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করে আসছে।
আরও পড়ুন:
রোগীর পেটে জীবন্ত মাছি!
পরিকল্পনা অনুযায়ী, নাগরিকরা স্মার্টফোন অ্যাপের মাধ্যমে একটি নিরাপদ ও বিনামূল্যের ডিজিটাল আইডি ব্যবহার করতে পারবেন। এটি নিয়োগকর্তা, ব্যাংক, বাড়িওয়ালা ও অভিবাসন কর্তৃপক্ষ সহজে যাচাই করতে পারবে। প্রযুক্তিটি সরকারের বিদ্যমান ‘ওয়ান লগইন’ ব্যবস্থার ওপর তৈরি হবে, যা বর্তমানে প্রায় ৫০টি সরকারি সেবা ব্যবহারে সহায়তা করছে।
এ উদ্যোগকে সমর্থন দিয়েছে টনি ব্লেয়ার ইনস্টিটিউট। তবে সমালোচকরা বলছেন, ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা সরকারের জন্য কঠিন হবে। কনজারভেটিভ এমপি ডেভিড ডেভিস সতর্ক করে বলেছেন, ‘বড় বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানই যখন তথ্য সুরক্ষায় ব্যর্থ হয়, তখন সরকারের সক্ষমতা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায়।’ লিবারেল ডেমোক্র্যাটরাও বাধ্যতামূলক আইডির বিরোধিতা করেছে।
আরও পড়ুন:
২৫ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস
ওপেন রাইটস গ্রুপের পরিচালক জিম কিলকক মনে করেন, এটি জনগণের ওপর অতিরিক্ত নজরদারির চাপ তৈরি করবে এবং সাধারণ মানুষকে প্রতিনিয়ত নিজের পরিচয় প্রমাণে বাধ্য করবে। অন্যদিকে প্রাক্তন হোম অফিস কর্মকর্তা ডেভিড রেনি বলেছেন, ‘অবৈধ অভিবাসন রোধে ডিজিটাল আইডি কোনো বাস্তবসম্মত সমাধান নয়, কারণ নিয়োগকর্তারা আগেই কর্মীর বৈধতা যাচাই করতে বাধ্য।’
সব মিলিয়ে, সরকারের এই পদক্ষেপ অভিবাসন নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি ব্যক্তিগত স্বাধীনতা ও গোপনীয়তা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক উসকে দিয়েছে।
আরও পড়ুন:
২৫ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস