বুঝে গিয়েছি কোথায় থামতে হবে (ভিডিও)
নাটকে অনবদ্য এক অভিনয়ের যাত্রা শেষ করে তিনি এখন মেলে ধরেছেন নিজেকে সিনেমার পর্দায়। অভিনয় হাসি, ব্যবহার সব কিছু দিয়েই তিনি মুগ্ধ করেছেন দশর্কদের। সারা বিশ্ব ঘুরে দেশের সিনেমা হলগুলোতে মুক্তি পেয়েছে মেহজাবীন চৌধুরী অভিনীত প্রথম সিনেমা ‘সাবা’। তার এই সিনেমা মুক্তি ও সমসাময়িক বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন আমাদের সময় অনলাইনের সঙ্গে।
আমাদের সময়: প্রথম সিনেমা মুক্তি পেয়েছে নিজ দেশে? অনুভূতি নিশ্চয়ই ভালো?
মেহজাবীন চৌধুরী: হ্যাঁ, তা তো অবশ্যই ভালো। এতোদিন ধরে বিশ্বের নানা দেশে ফ্যাস্টিভালগুলোতে সিনেমাটি প্রদর্শিত হয়েছে। এখন আমার দেশে মুক্তি পেয়েছে। এটা তো অবশ্যই ভালো লাগার বিষয়। সিনেমাটি নিয়ে প্রচারণার কাজে বেশ ব্যস্ত সময় পাড় হবে বলে মনে হচ্ছে।
আমাদের সময়: সিনেমা তো শুরু হয়ে গেছে, এখন নিয়মিত পাবে দর্শক আপনাকে বড় পর্দায়?
মেহজাবীন চৌধুরী: যেহেতু সিনেমা শুরু করে দিয়েছি, সামনেও আরও করব। নানা ধরণের গল্পে সিনেমা করব। যদি ভালো গল্প থাকে, আমার চরিত্র ভালো লাগে, তাহলে তো আমি নিয়মিত কাজ করতেই চাই।
আমাদের সময়: ‘সাবা’র জার্নিটা কেমন ডিরেক্টরের সঙ্গে?
আরও পড়ুন:
ওটিটি প্ল্যাটফরম আমার জন্য বেশ লাকি
মেহজাবীন চৌধুরী: আমিও এখন আসলে সমন্নয় করতে পারি। যেমন, মাকসুদ ভাই হচ্ছেন এই সিনেমার নির্মাতা আর আমি হচ্ছি অভিনয়শিল্পী। কিন্তু আমাদের মধ্যে একটা কোলাবরেশন ছিল। একটা বন্ধুত্ব আছে আমাদের। আর এ জন্যই আমি নির্ধিদ্বায় কাজ করতে পেরেছি। যদি আমার মাথায় কোনো আইডিয়া আসত, তখন নির্মাতাকে বলতে পারতাম। উনি কখনও এই ধরণের কথা বলেন নাই যে, আর্টিস্ট বেশি বুঝে। উনিও আমার আইডিয়াটা খুব ভালো ভাবে ওয়েলকাম করেছেন। তো এই যে কোলাবরেশনের জায়গাটা ছিল, এটা ওই অভিজ্ঞতা থেকেই শিখেছি। যদি কাজ না করতাম, না শিখতাম তাহলে তো এটা কোনোভাবেই শিখতে পারতাম না।
আমাদের সময়: ওয়েবে কিংবা নাটকে সিন্ডিকেট নিয়ে এখন বেশ আলোচনা চলছে। এ বিষয়ে আপনি কী বলবেন?
মেহজাবীন চৌধুরী: এমন অনেক কথাই এসেছে, আমি শুনেছি। দুই তিনজন শিল্পী মিলেই অভিনয় করে যাচ্ছে। নাটকের ইন্ডাস্ট্রিতে ডমিনেট সবাই করতে চায়, আমি সুযোগ পেলে কেন করব না। বিষয়টা আসলে এরকমই, যে যেভাবে ভেবে ভালো থাকে।
আমাদের সময়: গল্পের প্রয়োজনে তো নানা চরিত্রেই অভিনয় করতে হয়। এক চরিত্র থেকে বের হয়ে অন্য একটি চরিত্রে প্রবেশ করতে গিয়ে কখনও কি বাধা দিয়েছে আগের চরিত্রটি?
মেহজাবীন চৌধুরী: এরকম অনেক চরিত্রই থাকে যেগুলো করতে গিয়ে মনে হয়, এটা তো আমার ব্যক্তিগত গল্পের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে। শুধু যে চরিত্র তাই নয়। অনেক সময় স্ক্রিপ্টের সংলাপ মিলে যায়। অনেকগুলো ভালোবাসার গল্পে অভিনয় করতে গিয়ে দেখলাম সংলাপ, দৃশ্য মিলে যাচ্ছে আমার সঙ্গে। এটা শুধু আমি না। আমার মনে হয় প্রায় সব মানুষই সম্পর্কের জায়গা থেকে নাটক কিংবা সিনেমা দেখার পর মনে করেছে। আহ্ এটা তো আমার জীবনের সঙ্গে মিলে গেল।
আরও পড়ুন:
নানাকে নিয়ে পরীর আবেগঘন পোস্ট
আমাদের সময়: নাটকে তো আপনার দীর্ঘ একটা ক্যারিয়ার ছিল। এ বিষয়ে জানতে চাই...
মেহজাবীন চৌধুরী: খুব সুন্দরভাবে আমি আমার নাটকের ক্যারিয়ারটা পাড় করে এসেছি। আলহামদুলিল্লাহ, কৃতজ্ঞ আমি সবার প্রতি। সবাই যখন ফোন করে বলত, ‘এই গল্পটা করেছি এটা হচ্ছে মেহজাবীনের জন্য’। তো এটা অবশ্যই একজন শিল্পী হিসেবে অনেক ভালো লাগা কাজ করতো। সেই সময়টা পাড় করেছি আমি। কিন্তু আমি বুঝে গিয়েছি কোথায় থামতে হবে।
আমাদের সময়: এই যে লাইট-ক্যামেরা অ্যাকশনে দীর্ঘ সময় পাড় করেছেন। এর অভিজ্ঞতা নিয়ে কিছু বলুন...
মেহজাবীন চৌধুরী: আমি প্রত্যেকটা দিন আসলে সেটে এই অনুভূতি নিয়ে যেতাম যে, আজকে কাজটা দিন শেষে কেমন হবে আমি জানি না। হয়তো এই কাজের আউটপুটটা একেবারেই জিরো, কেউ দেখবে না পছন্দ করবে না, বলবে হয়েছে ফালতু। কিন্তু আমি তো গিয়ে কাজ করছি, ক্যামেরা ফেস করছি। আমার আশেপাশে অনেকগুলো সহ-শিল্পীরা আছেন। তারা অভিনয় করার চেষ্টা করছেন। তো এখান থেকে আমি সব সময় কিছু না কিছু শেখার চেষ্টা করেছি। তো শেখার জন্য হলেও আসলে অনেকটা সময় আমার কাজ করতে হয়েছে ইন্ডাস্ট্রিতে। এবং আজকে ওই অভিজ্ঞতা থাকাতেই আমার চরিত্র নিয়ে নিজে ভাবতে পারি, তৈরি করতে পারি। অবশ্যই আমাকে সাপোর্ট করার জন্য আমার টিম থাকে কিন্তু নিজের মধ্যে যে ধারণ করার বিষয়টা, এটাই তো আমার নিজস্বতা।
আরও পড়ুন:
‘এভাবে বিয়ে করা নাকি অর্থহীন’
আমাদের সময়: তাহলে বলতে চাচ্ছেন নাটকের অভিজ্ঞতাতেই আজকের মেহজাবীন?
মেহজাবীন চৌধুরী: একটা দীর্ঘ সময় আমি নাটকে কাজ করেছি। অবশ্যই সেখানে আমি শিখেছি। না শিখলে তো আর এতদূর আসতে পারতাম না। তবে কখন কোথায় কীভাবে সিচুয়েশেনটা হ্যান্ডেল করতে হবে একগুলো না বুঝলে তো আমার নিজেরও গ্রোথটাও হতো না। তো ওই গ্রোতের জন্যই মূলত এতো এতো কাজ করা। যখন আমি বুঝেছি, এখন আমি মোটমুটি পারি, এখন একটু চেষ্টা করি নিজেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়ার। নাটক থেকে ওয়েব ফিল্মে আসা। তারপর ওয়েব ফিল্ম থেকে সিরিজ করা। সেখান থেকে যখন একটা সময় ফিল্মের অফার আসে তখন ফিল্ম করা। তাই সব সময়ই আমি বলি ওই নাটকগুলো যদি আমি না করতাম তাহলে এই জায়গায় আমি পৌঁছাতে পারতাম না।