আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষা করে জাগৃকে নিয়োগ পরীক্ষা

শাহজাহান মোল্লা
২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০০:০০
শেয়ার :
আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষা করে জাগৃকে নিয়োগ পরীক্ষা

প্লট ও ফ্ল্যাটের জালিয়াতির পাশাপাশি সরকারি জনবল নিয়োগেও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের (জাগৃক) বিরুদ্ধে। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির বৈধতা নিয়ে আদালতে রিট আবেদন চলা সত্ত্বেও তড়িঘড়ি করে নিয়োগ কার্যক্রম শেষ করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন নিয়োগ কমিটির প্রধান আলমগীর হুছাইন। যদিও তিনি দাবি করেছেন, যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই নিয়োগ কার্যক্রম চলছে। আদালতের বিষয়টি তিনি জানেন না।

জাগৃকের নিয়োগ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি ও মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্র থেকে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ১৭ নভেম্বর গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ৯ম থেকে ২০তম গ্রেড পর্যন্ত ৮৬টি শূন্য পদের জন্য ছাড়পত্র দেয়। এরপর ২০২৫ সালের ৭ এপ্রিল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জাগৃক। বিজ্ঞপ্তির বৈধতা নিয়ে রিট আবেদন করেন প্রতিষ্ঠানের সহকারী পরিচালক (বর্তমানে প্রশাসনিক কর্মকর্তা-বগুড়া) আরিফুজ্জামান। এর মধ্যেই গত ২০ সেপ্টেম্বর এমসিকিউ পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর লিখিত পরীক্ষা হওয়ার কথা।

রিট আবেদনকারী আরিফুজ্জামান বলেন, আমাদের পদোন্নতি না দিয়ে নতুন নিয়োগ দিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। এ জন্য আমি আদালতে যাই। রিট চলার সময়ও নিয়োগ পরীক্ষা হলো। আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ রেজাউল হক বলেন, জাগৃকের (কর্মকর্তা/কর্মচারী) চাকরি প্রবিধানমালা-২০০৫ অনুযায়ী নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের সুপারিশের আলোকে শূন্য পদে নিয়োগ করার কথা বলা হয়েছে। সেখানে কীভাবে তারা পরীক্ষার ধাপ অনুসরণ করল? এ জন্য বিচারপতি ফাতেমা নজীব এবং বিচারপতি মো. হামিদুর রহমান সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না জানতে চেয়ে রুল জারি করেন।

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্রেও শর্ত দেওয়া ছিল- আদালতে রিট বা মামলা চলমান থাকলে আগে তা নিষ্পত্তি করতে হবে। কিন্তু জাগৃক সেই শর্তও মানেনি। অভিযোগ রয়েছে, তড়িঘড়ি করে নিয়োগ শেষ করে ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিল করতে চান আলমগীর হুছাইন। তবে তিনি এ অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। এ বিষয়ে নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব আলমগীর হুছাইন বলেন, শুধু এমসিকিউ পরীক্ষা হয়েছে। লিখিত পরীক্ষা আমরা নিইনি। পরীক্ষা নিচ্ছে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড পলিসি রিসার্চের তত্ত্বাবধানে। আদালতের কোনো নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে আমি জানি না।

এদিকে নিয়োগের ব্যয় নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। ২০২৫-২৬ অর্থবছরে স্ব-অর্থায়ন বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ ৪০ লাখ টাকা। কিন্তু জাগৃক আরও ৮১ লাখ ১৯ হাজার টাকা চেয়ে আবেদন করেছে। অর্থাৎ, ৮৬ জনকে নিয়োগ দিতে মোট ১ কোটি ২১ লাখ ১৯ হাজার টাকা খরচ দেখানো হচ্ছে, যা অস্বাভাবিক বলে মনে করছেন অনেকে।