ঋণ দেওয়ার দিন সঞ্চয় নিয়ে লাপাত্তা ভুয়া এনজিও
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় আকিজ গ্রুপের ক্ষুদ্র ঋণ কর্মসূচি নামের একটি সংস্থা গ্রাহকদের ঋণ দেওয়ার নাম করে লাখ লাখ টাকা নিয়ে উধাও হয়েছে একটি প্রতারক চক্র। আজ বৃহস্পতিবার ঋণ নিতে এসে গ্রাহকরা দেখেন আসবাবপত্র নিয়ে অফিস গুটিয়ে পালিয়েছে কর্মকর্তারা। এ সময় সেখানে তারা কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং অভিযুক্তের বিচার দাবি করেন।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রাহক সংগ্রহ করে ঋণ দেওয়ার নামে ১০ শতাংশ করে জামানত সংগ্রহ করে সংস্থাটি। সংস্থার কোম্পানীগঞ্জ শাখার ম্যানেজার হিসেবে গ্রাহকদের কাছে আমিনুল ইসলাম নামে জাতীয় পরিচয় পত্র প্রদান করেন। এমন প্রতারণার শিকার হয়েছেন শতাধিক মানুষ।
জানা গেছে, বসুরহাট পৌরসভা ৮নং ওয়ার্ড খান সাহেবের বাড়ির টিপু মিয়া থেকে বিল্ডিংয়ের ৩য় তলায় রুম ভাড়া করে অফিস করে ওই চক্র। বেশ কিছুদিন আসা যাওয়া করে। আজ বৃহস্পতিবার গ্রাহকদের ঋণ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গ্রাহককেরা ওই অফিসে ঋণ নিতে এসে দেখে আসবাবপত্র নিয়ে উধাও হয়ে গেছে প্রতারক চক্র।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী সবুজ বলেন, ‘ব্যবসার অবস্থা খুব একটা ভালো না। মালপত্র ওঠাতে পারছিনা। ওনারা এসেছেন, বলেছেন কম মুনাফায় ঋণ দেবেন। কাগজপত্রও তেমন লাগবেনা। তাই ৩ লাখ টাকা ঋণের আশায় ৩০ হাজার টাকা সঞ্চয় দিয়েছি। ঋণ দেওয়ার দিন গিয়ে দেখি তারা কেউ নেই।’
বসুরহাট পৌরসভা ৭নং ওয়ার্ডের আনোয়ার হোসেন নামেও আরেক ভুক্তভোগী বলেন, ‘ঋণ নেওয়ার জন্য জামানত দিয়েছিলাম। এখন শুনি তারা উধাও।’
ভাড়া নেওয়া বাসার মালিক টিপু বলেন, ‘আমিরুল ইসলাম নামে এক লোক আমার স্ত্রীর কাছে কয়েকদিন আগে আসে, আমাদের তৃতীয় তলার খালি বাসা ভাড়া নেওয়ার জন্য। যদিও ১ তারিখে বাসায় উঠা ও কাগজপত্র দেওয়ার কথা ছিল। তারা গত সোমবার বলেন, বুধবার তাদের একটা প্রোগ্রাম আছে জেলা ও ঢাকা থেকে অতিথিরা আসবে। তাই কিছু আসবাবপত্র রাখবে। এসব বলে মানুষকে অফিস পরিচয় দিয়ে ঋণ দেওয়ার কথা বলে টাকা পয়সা নিয়ে পালিয়ে গেছে।’
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. মাঈন উদ্দীন বলেন, ‘আকিজ গ্রুপের কোনও এনজিও উপজেলায় নেই, আমি এ এনজিওর নামও শুনিনি। এক ধরনের প্রতারকরা নাম সর্বস্ব এনজিও খুলে মানুষের কাছে থেকে টাকা লগ্নি করে উধাও হচ্ছে। এদের থেকে সচেতন থাকতে হবে। তাদের কাছে টাকা দেওয়ার আগে অবশ্যই তাদের কাগজপত্র যাচাই করে নিতে হবে।’
উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা স্মৃতি প্রভা নন্দী বলেন, ‘আকিজ গ্রুপের নামে কোনও প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন তাদের দপ্তরেও নেই।’