জামিনে মুক্তি পেয়ে সহোদরসহ ৬ জনকে হত্যাচেষ্টা
জেল হাজত থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে সহোদরসহ এলাকার ৬ জনকে কুপিয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে এক সন্ত্রাসী বাহিনীর নামে।
গতকাল বুধবার বিকেলে পাঁচআনী মাদ্রাসার সামনে একটি কালভার্টের পাশে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ও পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী পিরোজপুর ইউনিয়নের ছোট কোরবানপুর গ্রামের রাসেল এবং খাঁসেরগাঁও গ্রামের বাসিন্দা ও সাবেক ইউপি সদস্য মনির গ্রুপের বাহিনীরা এ ঘটনা ঘটায়।
এ সময় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহতরা হলেন পাঁচআনী গ্রামের আছানুল্লাহর দুই ছেলে ফারুক ও বজলুল, মাইদুলের ছেলে রতন, দরবেশ মৌলভীর ছেলে আল আমিন, মোতালেবের ছেলে দেলোয়ার ও রহমান মিস্ত্রির ছেলে আয়নাল হক।
আহত পরিবার ও এলাকাবাসী জানান, নারায়ণগঞ্জ জেলা আদালতে একটি মামলার স্বাক্ষী দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে পিরোজপুর পাঁচআনী মাদ্রাসার একটু সামনে কালবার্টের পাশে ওৎ পেতে থাকা স্থানীয় সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ী রাসেল ও মনির মেম্বার গ্রুপের ১০/১২ জনের একটি সঙ্গবদ্ধ দল ধারালো দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ফারুক, বজলুল, রতন, আল আমিন, দেলোয়ার ও আয়নাল হকের ওপর অতর্কিত হামলা করে। এতে আল আমিনের দুই হাতের আঙ্গুল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
অন্যদের মধ্যে আল আমিনসহ সকলকে সারা শরীরে উপর্যুপরি কুপিয়ে রক্তাক্ত আহত করে। এ সময় স্থানীয়রা খবর পেয়ে এগিয়ে গেলে সন্ত্রাসীরা দ্রুত পালিয়ে যায়।
আরও জানা যায়, রাসেল চৌরাস্তা হাবিবপুর এলাকায় র্যাবের হাতে ক্রসফায়ারে নিহত সন্ত্রাসী গিট্টু হৃদয়ের বোনের স্বামী। হৃদয় নিহতের পর থেকে তার সকল সহযোগিরা রাসেলের রাজত্বে বিচরণ করে। আর তারাই সোনারগাঁওয়ে নৌপথসহ বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ডাকাতি, অপহরণ, লুটতরাজ, মাদক ব্যবসাসহ এমন কোনো অপরাধ নেই যা তারা করে না।
উল্লেখ্য, গত ১০ আগস্ট দিবাগত রাত ৩টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত পিরোজপুর ইউনিয়নের পাঁচআনী গ্রামে ২নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার মনির হোসেনের বাড়িতে অভিযান চালান র্যাব-১১ এর সদস্যরা। ওই অভিযানে মনির মেম্বার, তার ছেলে বাবু, যুবরাজ, ডাকাত সাদ্দামসহ ৬ জনকে দেশীয় অস্ত্রসহ গ্রেফতার করা হয়।
পরে গ্রেপ্তার হওয়া ৬ জনের মধ্যে দুইজন জামিনে বের হয়ে এলাকায় অস্ত্র হাতে মহড়া দিলে গ্রামবাসীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ধাওয়া দিয়ে এলাকা ছাড়া করে তাদের। এরপর থেকে সন্ত্রাসীরা এলাকায় প্রবেশ করতে পারেনি।
সম্প্রতি সকল আসামিরা জামিনে মুক্তি পেয়ে গ্রামবাসীদের ঐক্যবদ্ধ রাখার পেছনে যারা ছিল খোঁজ নিয়ে তাদের ওপর পরিকল্পিত এই হামলা চালায় রাসেল বাহিনী।
সোনারগাঁও থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) রাশেদ হাসান খান বলেন, ‘লোক মারফত খবর পেয়ে ওই এলাকায় পুলিশ দ্বারা নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ঘটনাস্থল সার্কেল এএসপি স্যার পরিদর্শন করেছেন। আহতরা ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আহতদের দ্রুত সম্ভব তাদেরকে থানায় অভিযোগ দিতে উৎসাহিত করা হয়েছে।’