৫০ বছরেও দক্ষ জনবল গড়ে তুলতে পারেনি বেবিচক
দীর্ঘ ৫০ বছরেও নিজস্ব দক্ষ জনবল গড়ে তুলতে পারেনি বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। ফলে ফ্লাইট সেফটি বিভাগের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতে চুক্তিভিত্তিক পরামর্শকদের ওপরই নির্ভর করতে হচ্ছে। অথচ এসব পরামর্শকের বেশির ভাগের চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে বহু আগেই। বেতন-ভাতা ছাড়াই তাদের দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক অডিটে বাংলাদেশের বিমান চলাচল খাতকে বড় ধরনের ঝুঁকিতে ফেলতে পারে।
গত সোমবার বেবিচকের ৩০৭তম বোর্ডসভায় বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। নথি পর্যালোচনায় দেখা যায়, বর্তমানে ফ্লাইট সেফটি শাখায় কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পর্যাপ্ত যোগ্যতা, দক্ষতা বা অভিজ্ঞতা রাখেন না। এজন্যই দীর্ঘদিন ধরে চুক্তিভিত্তিক পরামর্শক নিয়োগ দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ চালানো হচ্ছে।
সভায় বেবিচক সদস্য (প্রশাসন) এসএম লাবলুর রহমান জানান, এখন চাহিদা অনুযায়ী কনসালটেন্ট নিয়োগের উদ্যোগ নিতে হবে। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি সভায় মত দেন, পরামর্শক নিয়োগ অবশ্যই নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে হতে হবে এবং তার জন্য একটি সুস্পষ্ট রূপরেখা প্রণয়ন করা জরুরি। সভার সভাপতিত্বকারী বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, পরামর্শকের ওপর নির্ভরতা থেকে বের হওয়ার উপায় খুঁজতে হবে। বর্তমানে ৪৭ জন পরামর্শকের মধ্যে ৪৩ জনের চুক্তির মেয়াদ কয়েক মাস আগে শেষ হয়েছে। অথচ তাদের দিয়েই উড়োজাহাজ ইনস্পেকশন, পাইলটদের লাইসেন্স নবায়ন, চেক রাইড এবং সার্টিফিকেশন অনুমোদনের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ চালানো হচ্ছে। বেতন না পেলেও তারা দায়িত্ব পালন করছেন, তবে এর কোনো আইনি বৈধতা নেই।
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
বিশেষজ্ঞদের মতে, এভাবে মেয়াদোত্তীর্ণ
পরামর্শকদের দিয়ে কাজ করালে তাদের জারি করা লাইসেন্স বা সার্টিফিকেশনের বৈধতা নিয়েও আন্তর্জাতিক প্রশ্ন উঠতে পারে। আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থার (আইকাও) অডিটে এটি ধরা পড়লে ‘সিগনিফিক্যান্ট সেফটি কনসার্ন (এসএসসি)’ সতর্কতা জারি হতে পারে।
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সদস্য ও অ্যাভিয়েশন বিশেষজ্ঞ কাজী ওয়াহিদুল আলম বলেন, বেবিচককে নিজস্ব দক্ষ জনবল গড়ে তোলার দিকে এখনই জোর দিতে হবে। একটি প্রতিষ্ঠানে এত পরামর্শক থাকা কাম্য নয়। আবার মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পরও তাদের দিয়ে কাজ চালানো আইনসঙ্গত নয়। যাদের চুক্তি নবায়ন হবে না, তাদের কাজের দায়-দায়িত্ব কে নেবে- এই প্রশ্ন এখন সবচেয়ে বড়।