এক নারীকে স্ত্রী দাবি করা দুই পুরুষ কারাগারে

যশোর প্রতিনিধি
২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯:১৮
শেয়ার :
এক নারীকে স্ত্রী দাবি করা দুই পুরুষ কারাগারে

যশোরে রীতিমতো নাটকের জন্ম দিয়েছেন এক নারী ও তার স্বামী দাবি করা দুই পুরুষ। ওই নারীকে নিয়ে দুই পুরুষ প্রকাশ্যে টানাহেঁচড়া করলেন থানার সামনেই। তা দেখতে সেখানে ভিড় জমিয়েছিল উৎসুক জনতা। পরে পুলিশ তাদের আটক করে আদালতে পাঠায়। আদালত ওই দুই পুরুষকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়ার পাশাপাশি ওই নারীকে তার পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দিয়েছেন।  

আজ মঙ্গলবার বিকেলে যশোর কোতোয়ালি থানা চত্বরে এক নারীকে নিয়ে দুই পুরুষের এ টানাহেঁচড়ার ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, ফরিদপুর সদর উপজেলার কানাইপুরের বাসিন্দা বিকাশ অধিকারীর সঙ্গে প্রায় ৩৬ বছর ধরে সংসার করছেন সীমা অধিকারী। এই সংসারে তাদের এক ছেলে ও এক মেয়ে আছে।  তবে সেই সাজানো সংসার ছেড়ে সীমা অধিকারী সম্প্রতি ফরিদপুর সদরের বাসিন্দা পলাশ কুন্ডুর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। শুধু তাই নয়, বিকাশ অধিকারীর ঘর ছেড়ে পালিয়ে পলাশের হাত ধরে তিনি ভারতে চলে যান এবং সেখানে তারা বিয়েও করেন।

এরপর গতকাল সোমবার রাতে তারা যশোরে এসে একটি হোটেলে ওঠেন। বিষয়টি বিকাশ জানতে পেরে সেই হোটেলে হানা দেন। এরপরই ত্রিমুখী এই ঝামেলা গড়ায় থানা পর্যন্ত। আইনি সহায়তা নিতে বিকাশ, সীমা ও পলাশ তিনজনই কোতোয়ালি থানায় হাজির হন। আর সেখানেই শুরু হয় চরম উত্তেজনা। হাতাহাতি থেকে তিনজনের মধ্যে মারামারিতেও রূপ নেয়।

এ সময় পলাশ কুন্ডু বলেন, সীমার সঙ্গে তার তিন বছরের সম্পর্ক। তারা দুজনেই স্বেচ্ছায় বিয়ে করেছেন এবং এখন একসঙ্গে থাকতে চান।  তাদের পথের কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছেন বিকাশ।

সীমা অধিকারী বলেন, বিকাশের সংসারে তিনি নিয়মিত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হতেন। সেই অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে তিনি বাধ্য হয়ে বিকাশকে ছেড়ে পলাশকে বিয়ে করেছেন। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তিনি আর বিকাশের সঙ্গে সংসার করবেন না।

প্রথম স্বামী বিকাশ অধিকারী দাবি করেন, সীমার পরকীয়ায় কারণে তাদের সাজানো সংসার ভেঙে যাচ্ছে। সীমা শুধু বাড়ি ছাড়েননি, বরং পালিয়ে যাওয়ার সময় নগদ টাকা ও গয়নাও নিয়ে গেছেন। তিনি সীমাকে যেকোনো মূল্যে বাড়িতে ফিরিয়ে নিতে চান।

কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কাজী বাবুল জানান, ৯৯৯-এ কল পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের তিনজনকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পরে তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালত ওই দুই পুরুষকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। আর ওই নারীকে তার পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দিয়েছেন।