আখতারের ওপর ডিম নিক্ষেপ /
এনসিপির ৩ দাবি
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর দলের সদস্যসচিব আখতার হোসেনকে লক্ষ্য করে ডিম নিক্ষেপের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি)। পাশাপাশি এ ঘটনাকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ আখ্যা দিয়ে বাংলাদেশ সরকারের কাছে তিন দাবি উত্থাপন করেছে দলটি।
আজ মঙ্গলবার এনসিপি ডায়াস্পোরা অ্যালায়েন্সের এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ‘আমরা গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, সরকারি আমন্ত্রণে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট সফরে অংশগ্রহণকারী জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতা আখতার হোসেন ও তাসনিম জারার ওপর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সমর্থক সন্ত্রাসীরা ন্যাক্কারজনক হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনা শুধু রাজনৈতিক সহিংসতার বহিঃপ্রকাশ নয়, বরং রাষ্ট্রের কূটনৈতিক মর্যাদা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার চরম ব্যর্থতার উদাহরণ।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা প্রশ্ন রাখছি-যদি সরকারি সফরের অংশগ্রহণকারীরা ন্যূনতম নিরাপত্তা না পান, তবে বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি কনস্যুলেট ও দূতাবাসগুলোর অস্তিত্বের যৌক্তিকতা কোথায়? তারা কাদের স্বার্থে কাজ করছে, আর কেন এ ধরনের অপরাধীদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না?’
বাংলাদেশ সরকার এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রাষ্ট্রীয় সফররত ব্যক্তিদের নিরাপত্তা প্রদানে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছেন উল্লেখ করে এনসিপি বলেছে, ‘আমরা বাংলাদেশ সরকারের কাছে এই বিষয়ে অবিলম্বে দৃঢ় পদক্ষেপের দাবি জানাই।’
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
এ ক্ষেত্রে সুস্পষ্ট তিনটি দাবির কথা জানিয়েছে দলটি। সেগুলো হলো-
১. বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকার এবং নিউইয়র্ক শহরের সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সরাসরি অভিযোগ করতে হবে।
২. নিউইয়র্কের বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলসহ সম্পূর্ণ ফরেন সার্ভিস টিমকে অবিলম্বে চাকরিচ্যুত করতে হবে।
৩. সফরের পরবর্তী অংশের জন্য প্রত্যেক সফররত নেতাদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘উল্লেখযোগ্য যে, আখতার হোসেন ও তাসনিম জারার সঙ্গে এই হামলার সময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ অন্যান্য সফরসঙ্গীরাও ছিলেন এবং তারাও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের তোপের মুখে পড়েন। কিন্ত এই হামলার প্রধান লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে মূলত এনসিপি নেতৃবৃন্দকে।’
দলটি বলছে, ‘জুলাই বিপ্লবের সময় যারা জীবনবাজি রেখে লড়েছিলেন, তাদের প্রতি প্রতিশোধপরায়ণ হামলাকারীদের ক্ষোভ আজও থামেনি। আখতার হোসেনকে খুনি হাসিনা সরকার জুলাইতে গ্রেপ্তার করে নির্যাতন চালায়। যিনি গণআন্দোলনের জন্য নিজের জীবন ঝুঁকিতে ফেলেছিলেন, আজও সেই সংগ্রামের মূল্য দিতে হচ্ছে। এটা অন্তর্বর্তী সরকারের চরম ব্যর্থতা।’
বিবৃতির শেষে এনসিপি বলছে, ‘আমরা স্পষ্টভাবে জানাচ্ছি-বিদেশি মাটিতে আওয়ামী লীগের এ ধরনের সন্ত্রাসী হামলা শুধু প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিরাপত্তার জন্য নয়, বরং বাংলাদেশের মর্যাদা ও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের জন্যও হুমকিস্বরূপ। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই এবং অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ দাবি করছি।’
প্রসঙ্গত, স্থানীয় সময় সোমবার নিউইয়র্কের কেনেডি বিমানবন্দর থেকে বের হওয়ার সময় আখতার হোসেনের ওপর ডিম নিক্ষেপ করা হয়। এ সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে তাকে লক্ষ্য করে ডিম ছুড়েন। সে সময় তার সঙ্গে ছিলেন এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক তাসনিম জারা। এ ছাড়া কাছাকাছি অবস্থান করছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং তারেক রহমানের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির।
