দ্বিতীয় দিনের মতো রাজশাহী-ঢাকা রুটে বাস বন্ধ

রাজশাহী ব্যুরো
২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:২০
শেয়ার :
দ্বিতীয় দিনের মতো রাজশাহী-ঢাকা রুটে বাস বন্ধ

 ভাতাসহ একাধিক দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো কর্মবিরতি পালন করছেন রাজশাহী-ঢাকা রুটের বাস-কোচের চালক ও শ্রমিকরা। 

রাজশাহী-ঢাকা রুটে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।  

প্রসঙ্গত, গতকাল সোমবার সকাল থেকে শ্রমিকরা অনির্দিষ্টকালের জন্য বাস চলাচল বন্ধের ঘোষণা করে দেন।

এরই ধারাবাহিকতায় আজ মঙ্গলবার সকালেও রাজশাহীর শিরোইল বাস টার্মিনালে ন্যাশনাল, দেশ, হানিফ, গ্রামীণ ও শ্যামলী ট্রাভেলসের কাউন্টার বন্ধ দেখা গেছে। ফটকের সামনে ঝুলছে কর্মবিরতির ব্যানার, শ্রমিকরা মাঝে মাঝে স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করছেন।

শ্রমিকদের অভিযোগ, দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে তাদের বেতন বাড়ানো হয়নি। বর্তমানে চালক এক ট্রিপে পান মাত্র ১,২০০ টাকা, হেলপার ৬০০ টাকা ও সুপারভাইজার আরও কম। তারা দাবি তুলেছেন, চালকের বেতন ট্রিপপ্রতি ২ হাজার, হেলপারের ১ হাজার ও সুপারভাইজারের ১,১০০ টাকা নির্ধারণের পাশাপাশি হোটেল ভাড়া ও খাবারের খরচ ভাতা হিসেবে দেওয়ার জন্য।

ন্যাশনাল ট্রাভেলসের চালক আলী হোসেন বলেন, ‘১৭ বছর ধরে আমাদের বেতন বাড়ানো হয়নি। প্রতিবার মালিক পক্ষ আশ্বাস দিলেও বাস্তবে কিছু হয় না। তাই এবার সব শ্রমিক একসঙ্গে আন্দোলনে নেমেছি।’

শ্রমিক নেতা মো. সেলিম বলেন, ‘১৭ বছর ধরে বেতন বাড়েনি। প্রতিবার মালিকপক্ষ শুধু আশ্বাস দেন, বাস্তবে কিছু হয় না। এবার দাবিগুলো পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে। হয় বেতন বাড়বে, না হয় গাড়ির চাকা ঘুড়বে না।’

রাজশাহী পরিবহন গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম হেলাল বলেন, ‘আমরা বারবার মালিকপক্ষের সঙ্গে বসেছি। সর্বশেষ তারা আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু সেটির বাস্তব প্রয়োগ না হওয়ায় শ্রমিকরা আবারও আন্দোলনে নেমেছে।’

তিনি বলেন, ‘রাজশাহী-ঢাকাগামী বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে একতা পরিবহন চালু রয়েছে। আমরা বলেছি কেউ যদি স্বেচ্ছায় গাড়ি চালাতে চায় তাকে বাধা দেওয়া যাবে না। শ্রমিকরা শ্রমিকদের আন্দোলন করবে। তাদের দাবি পূরণ হলে তবেই গাড়ি চালানো শুরু হবে।’

এদিকে হঠাৎ বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যাত্রীরা বিকল্প পরিবহনের খোঁজে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। তবে একতা পরিবহন ও কিছু লোকাল বাস চলায় সেখানে অনেক ভিড় দেখা গেছে। 

অন্যদিকে ট্রেনের টিকিটও পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন অনেক যাত্রী।

ঢাকাগামী যাত্রী শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘টিকিট আগে কেটে রেখেছিলাম, কিন্তু এসে দেখি কাউন্টার বন্ধ। জরুরি কাজে ঢাকায় যেতে হবে, অথচ কোনো উপায় নেই। বাধ্য হয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে।’

আরেক যাত্রী নাসরিন আক্তার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘সারাদিন ঘুরেও টিকিট পাইনি। শিশু সন্তান নিয়ে পথে পথে হয়রানি পোহাচ্ছি। এভাবে সাধারণ মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলা ঠিক নয়।’