জাতিসংঘের নতুন নিষেধাজ্ঞা /

ইরানি সংসদে পারমাণবিক অস্ত্রের ডাক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:২৫
শেয়ার :
ইরানি সংসদে পারমাণবিক অস্ত্রের ডাক

ইরানের কট্টরপন্থী আইনপ্রণেতারা আবারও পারমাণবিক বোমা তৈরির দাবি তুলেছেন। দেশটির প্রতিরক্ষা নীতিতে ‘পরিবর্তন আনার’ আহ্বান জানিয়েছেন তারা। জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের কয়েকদিন আগে তারা এ দাবি তোলেন। এ অবস্থায় পশ্চিমা শক্তিগুলোর শঙ্কা, ইসরায়েলের সঙ্গে আবারও ইরানের যুদ্ধ শুরু হতে পারে।

আল জাজিরার প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, উত্তর-পূর্ব ইরানের কট্টরপন্থী পবিত্র শিয়া নগরী মাশহাদের একজন সংসদ সদস্যের নেতৃত্বে ৭০ জন সংসদ সদস্য একটি চিঠিতে স্বাক্ষর করেন। এতে দেশটির প্রতিরক্ষা নীতিতে ‘পরিবর্তন আনার’ আহ্বান জানানো হয়েছে।

রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ফার্স নিউজে প্রকাশিত ওই চিঠি সরাসরি সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির উদ্দেশে লেখা হয়নি, কারণ তার আদেশ অন্য কোনো কর্তৃপক্ষ প্রশ্ন করতে পারে না। বরং চিঠিটি পাঠানো হয়েছে সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের কাছে, যারা পারমাণবিক বিষয়ক সিদ্ধান্ত নেয় এবং যার মধ্যে প্রেসিডেন্ট, বিচার বিভাগের প্রধান ও সংসদের প্রধান অন্তর্ভুক্ত।

ইরান বহুদিন ধরে দাবি করে আসছে যে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শুধুই বেসামরিক উদ্দেশ্যে, বোমা তৈরির জন্য নয়। যদিও তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ইসরায়েলকে অঞ্চলটির একমাত্র পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশ হিসেবে ধরা হয়।

আইনপ্রণেতারা যুক্তি দিয়েছেন, খামেনি প্রায় দুই দশক আগে একটি ফতোয়া জারি করেছিলেন যাতে পারমাণবিক বোমা ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল। তবে সেটি প্রযুক্তিগতভাবে বোমা তৈরি বা প্রতিরক্ষামূলকভাবে সংরক্ষণে নিষেধাজ্ঞা দেয় না।

তাদের বক্তব্যে বলা হয়, ইসরায়েল পাগলামির চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে, তারা আন্তর্জাতিক আইন-কানুনের তোয়াক্কা না করে হামলা চালাচ্ছে এবং নিরীহ মানুষ হত্যা করছে।

গত জুনে ইসরায়েলের আকস্মিক হামলার পর ইরানে যে ১২ দিনের যুদ্ধ হয়েছিল এবং যেখানে ওয়াশিংটন ইসরায়েলের পক্ষে হস্তক্ষেপ করে ইরানের প্রধান পারমাণবিক স্থাপনাগুলো বোমা হামলা চালায়, তার পর থেকে ইরানের কট্টরপন্থী মহলে এ ধরনের বক্তব্য আরও জোরালো হয়েছে।

ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ রোববার ঘোষণা করেছে, ফ্রান্স, জার্মানি ও যুক্তরাজ্যের পদক্ষেপে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের পর থেকে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক জ্বালানি সংস্থা (আইএইএ)-এর সঙ্গে সহযোগিতা এখন স্থগিত করা হলো।

ইউরোপের এই তিন দেশ (ই-থ্রি) এখনো ইরানের সঙ্গে ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তির স্বাক্ষরকারী হিসেবে রয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৮ সালে একতরফাভাবে ওই চুক্তি থেকে সরে যান এবং কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন।

চীন ও রাশিয়ার কড়া বিরোধিতা সত্ত্বেও-যারা ২০১৫ সালের ঐতিহাসিক চুক্তিতে আলোচনায় ছিল এবং স্বাক্ষরও করেছিল-ই-থ্রি দেশগুলো সেই চুক্তির “স্ন্যাপব্যাক” ধারা সক্রিয় করে। এর মাধ্যমে তারা গত সপ্তাহে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ভোট নিশ্চিত করেছে।