যে কারণে ১১ দিনের শিশু নিয়ে কারাগারে মা

অনলাইন ডেস্ক
২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৩৭
শেয়ার :
যে কারণে ১১ দিনের শিশু নিয়ে কারাগারে মা

সাত দিন ধরে খুলনা নগরের একটি হাসপাতালের কক্ষে মায়ের সঙ্গে বন্দী ছিল ১১ দিনের শিশুটি। পরে শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় গ্রেপ্তার শাহজাদীকে হাসপাতাল থেকে আদালতে পাঠায় পুলিশ। এ সময় দেখাশোনা করার কেউ না থাকায় মায়ের সঙ্গে কন্যাশিশুটিকে খুলনা জেলা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। 

গতকাল রোববার দুপুরে খুলনার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম শাহজাদীকে কারাগারে পাঠানোর এ নির্দেশ দেন। 

জানা গেছে, রোববার আদালতে শাহজাদীর পক্ষে কেউ জামিন আবেদন করেননি। ছিলেন না কোনো আইনজীবী। তাই কোনো শুনানিও হয়নি।

আরও জানা গেছে, বাগেরহাটের রামপালের বাসিন্দা সিরাজুল ইসলাম ও ফকিরহাটের মেয়ে শাহজাদীর সংসারে চার কন্যা রয়েছে। আবারও অন্তঃসত্ত্বা হন শাহজাদী। তবে অনাগত সন্তান যেন ছেলে হয়-এমন প্রত্যাশা ছিল স্বামী ও তার পরিবারের। কন্যা হলে বিয়ে বিচ্ছেদের হুমকি দিয়েছিলেন স্বামী।

এমন অবস্থায় গত ১১ সেপ্টেম্বর রাতে সিজারিয়ানের মাধ্যমে কন্যা সন্তান জন্ম দেন শাহজাদী। সংবাদ শুনেই হাসপাতাল ত্যাগ করেন সিরাজুল ইসলাম। পরের দিনগুলোতে তিনি আর হাসপাতালে আসেননি। পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগও রাখেননি।

অবশেষে নানামুখী চাপে দিশাহারা শাহজাদী ১৫ সেপ্টেম্বর দুপুরে একই হাসপাতালে জন্ম নেওয়া আরেক নারীর ছেলে সন্তান চুরি করেন। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও পুলিশের তৎপরতায় ওইদিন সন্ধ্যায় ছেলে নবজাতক উদ্ধার করা হয়। আটক করা হয় শাহজাদীর মা নার্গিস বেগমকে (৫৫)।

এ ঘটনায় শাহজাদী ও তার মাকে আসামি করে মানবপাচার আইনে মামলা করেন চুরি যাওয়া শিশুর বাবা মির্জা সুমন (২৯)। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে নার্গিস বেগমকে কারাগারে পাঠানো হয়।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ছয় দিন ধরে শাহজাদীর মা নার্গিস বেগম কারাগারে। আর শাহজাদী হাসপাতালের একটি কক্ষে পুলিশ পাহারায় চিকিৎসাধীন ছিলেন। রোববার ছাড়পত্রের দিনও শিশুর বাবা সিরাজুল ইসলাম আসেননি। দুঃসম্পর্কের এক ভাই শাহজাদীর বিল পরিশোধ করেন।

এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানা পুলিশের এসআই শাহীন কবির জানান, আসামি সুস্থ হওয়ায় আইন মেনে তাকে আদালতে তোলা হয়। কিন্তু আদালতে শাহজাদীর পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। কেউ জামিন আবেদনও করেননি। আদালত আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। 

নবজাতকের বিষয়টি পৃথকভাবে কেউ আদালতকে জানাননি। প্রথা অনুযায়ী, মায়ের সঙ্গেই তাকে থাকতে দেওয়া হয়েছে বলে জানান মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।