নিক্সন চৌধুরীর উসকানিতে ভাঙ্গায় সহিংসতা
ফরিদপুর-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) মজিবুর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন চৌধুরীর উসকানিমূলক বক্তব্যের কারণে জেলার ভাঙ্গায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘ্নিত হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাস সংক্রান্তে প্রকাশিত গেজেট অনুযায়ী ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ও হামিরদী ইউনিয়ন ফরিদপুর-৪ আসন থেকে পৃথক করে ফরিদপুর-২ আসনের সাথে অন্তর্ভুক্ত করায় স্থানীয় জনসাধারণ গত ৫ সেপ্টেম্বর থেকে ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলার ঢাকা-খুলনা, ঢাকা- বরিশাল, ফরিদপুর-ভালা মহাসড়কে অবস্থান ও অবরোধসহ নানাবিধ কর্মসূচি পালন করছে।
ওই কর্মসূচিকে পুঁজি করে সাবেক সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সনের সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিক উসকানিমূলক বক্তব্য ও কার্যকলাপে ভাঙ্গা উপজেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘ্নিত হয়েছে। গত ৯ সেপ্টেম্বর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাবেক সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন এই আন্দোলনকে সহিংস আন্দোলনে রূপ দেওয়ার লক্ষ্যে ভিডিওবার্তায় বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনকে অবৈধ বলে উল্লেখ করেন।
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
তিনি রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্য দেওয়ার পাশাপাশি তার দলীয় কর্মী-সমর্থকদের আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া এবং প্রয়োজনে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাস্তাঘাট বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেন। নিক্সন চৌধুরীর ভিডিওবার্তা তার সমর্থকরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচার করেন এবং এর মাধ্যমে তার অনুসারীদের পাশাপাশি সাধারণ জনগণকে আন্দোলনে সহিংস হতে উসকে দেন।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৫ সেপ্টেম্বর জনগণের আন্দোলনে অনুপ্রবেশকারী তার অনুগত কর্মী-সমর্থকরা ভাঙ্গা থানা, ভাঙ্গা হাইওয়ে থানা, ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়, ভাঙ্গা নির্বাচন অফিস ও ভাঙ্গা কৃষি অফিসে ভাংচুর এবং সরকারি গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে ব্যাপকভাবে সরকারি সম্পত্তির ক্ষতিসাধন করেন। ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ভাঙ্গা থানায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ায় ১৯ সেপ্টেম্বর আরও একটি ভিডিও বার্তায় নিক্সন চৌধুরী পুনরায় বর্তমান সরকার, নির্বাচন কমিশনকে অবৈধ হিসেবে আখ্যায়িত করার পাশাপাশি পুলিশের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিষোদগার করেন। যেখানে তিনি মামলা দিয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করা হচ্ছে বলে দাবি করে সাধারণ জনগণকে উসকে দেওয়ার চেষ্টা করেন, যা ভবিষ্যতে আরও ধ্বংসাত্মক আন্দোলনের ইঙ্গিত দেয়।
জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ সদর দপ্তর বলেছে, কারও কোনো উসকানিমূলক বক্তব্যে বিভ্রান্ত না হয়ে জনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে আইন মেনে চলুন এবং পুলিশকে সহযোগিতা করুন। মামলা দিয়ে কোনো নিরপরাধ ব্যক্তিকে হয়রানি করা হবে না বলে পুলিশের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হলো। কেউ যদি উসকানিমূলক বক্তব্য বা গুজব প্রচারে অংশ নিলে তা দ্রুত নিকটস্থ থানায় জানানোর অনুরোধ করা হলো।