হোমনায় মাজার ভাঙচুর-বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় পুলিশের মামলা
নবীজিকে (স.) নিয়ে কটূক্তির ঘটনায় গ্রেপ্তারের পরদিন কুমিল্লার হোমনায় ঘটে সহিংসতা। এই ঘটনায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার আসাদপুর গ্রামে মহসিনের দাদা কফিল শাহর মাজার ও তার পরিবারের ঘরে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে উত্তেজিত জনতা। এ সময় ওই এলাকার কালু শাহ, আবদু শাহ ও হাওয়ালী শাহর মাজারেও হামলার ঘটনা ঘটে। ওইসব মাজার ও ঘরে থাকা দানবাক্স, আসবাবপত্র, নগদ অর্থ লুট হয়। ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশের হিসাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২০ লাখ টাকা।
পুলিশ জানায়, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার পক্ষ থেকে কোনো মামলা না হওয়ায় নিজ উদ্যোগে এজাহার দায়ের করেছে থানা পুলিশ। মামলায় ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, চুরি ও সরকারি কাজে বাধাদানের অভিযোগ আনা হয়েছে।
এর আগে গত বুধবার হোমনা উপজেলার আসাদপুর ফকির বাড়ির মহসিন নামে এক যুবক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নবীজিকে (স.) নিয়ে কটূক্তি করেন। পুলিশ দ্রুত তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কুমিল্লা কারাগারে পাঠায়। এ ঘটনায় হোমনা থানায় আরেকটি মামলা হয়।
ঘটনার পর পুলিশ, সেনা ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা এলাকায় টহল জোরদার করেন। বর্তমানে হোমনার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। আজ শুক্রবার জুমার নামাজের সময় মসজিদের মাইকে জনসাধারণকে শান্ত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। মাজারগুলোতে এখন পুলিশ ও সেনা টহল রয়েছে। বৃহস্পতিবার উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা সাইদুল হক ও ইসলামী আন্দোলনের নেতা মাওলানা তাইজুল ইসলাম প্রশাসনের আহ্বানে ঘটনাস্থলে গিয়ে উপস্থিত জনগণকে আইন নিজের হাতে তুলে না নিয়ে শান্ত থাকার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে তার জন্য সতর্ক থাকতে বলেন।
হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মামলা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ শান্ত রয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন আছে এবং প্রতিটি মাজার এলাকায় টহল জোরদার করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার কোনো সহযোগিতা চাইলে আমরা দিতে প্রস্তুত আছি।’
এ ঘটনায় জড়িত কাউকে শনাক্ত করা গেছে কিনা -এমন প্রশ্ন তিনি জানান, আমাদের তদন্ত কাজ চলছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ক্ষেমালিকা চাকমা বলেন, ‘বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক। এলাকায় পুলিশ ও সেনা টহল অব্যাহত আছে।প্রশাসন সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে যেন আর কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।’