গাজা যুদ্ধবিরতিতে মার্কিন ভেটো, নিরাপত্তা পরিষদে নিন্দার ঝড়
গাজায় গণহত্যা রোধে জরুরি পদক্ষেপের প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ষষ্ঠ ভেটো দেওয়ার পর জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে বিভিন্ন দেশের দূতদের বক্তব্যে হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ পেয়েছে। ১৫ সদস্যের মধ্যে ১৪ দেশ সমর্থন দিলেও ওয়াশিংটনের একক ভেটোতে প্রস্তাবটি গৃহীত হয়নি।
আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূত আমর বেনদজামা অধিবেশনে বক্তব্য শুরু করেন ফিলিস্তিনিদের কাছে ক্ষমা চেয়ে। তিনি বলেন, ‘ক্ষমা করবেন, কারণ বিশ্ব অধিকার নিয়ে কথা বলে, অথচ আপনাদের সেই অধিকার অস্বীকার করে। কারণ ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক আইন নয়, বরং এই ব্যবস্থার পক্ষপাতিত্ব রক্ষা করছে। ইসরায়েল প্রতিদিন হত্যা করছে, আর কিছুই ঘটছে না।’
রুয়ান্ডা (১৯৯৪) ও বসনিয়া (১৯৯৫) গণহত্যার উদাহরণ টেনে তিনি সতর্ক করেন, ‘এই পরিষদ আগেও দু’বার গণহত্যা ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে। আজ আমরা তৃতীয় ব্যর্থতার মুখে দাঁড়িয়ে আছি। এখন দ্ব্যর্থতার সুযোগ নেই- হয় গণহত্যা থামাতে কাজ করতে হবে, নয়তো সহযোগীর আসনে নাম লেখাতে হবে।’
আরও পড়ুন:
রোগীর পেটে জীবন্ত মাছি!
পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত আসিম ইফতিখার আহমদ বলেন, ‘নিরাপত্তা পরিষদ গাজার মানবিক বিপর্যয়ের সমাধানে ব্যর্থ হলো কেবল একটি ভেটোর কারণে। এ ধরনের পদক্ষেপ কেবল ভুক্তভোগীদের কষ্ট দীর্ঘায়িত করছে।’
রাশিয়ার দূত ভাসিলি নেবেনজিয়া বলেন, ‘আজ নিরাপত্তা পরিষদের ১০ হাজারতম বৈঠকে আমরা আবারও মার্কিন ভেটোর সাক্ষী হলাম। এটি এমন একটি প্রস্তাব আটকে দিল, যা রক্তপাত থামাতে পারত। এই ভেটো কেবল পরিষদকে নয়, কূটনীতিকেও অচল করে দিচ্ছে।’
আরও পড়ুন:
২৫ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস
গায়ানার প্রতিনিধি ক্যারোলিন রদ্রিগেজ-বার্কেট বলেন, ‘১৯৪৭ সাল থেকে ফিলিস্তিন নিয়ে পরিষদে আলোচনা হচ্ছে, আর এর ফল আজও গণহত্যা। হ্যাঁ, গণহত্যা- যে শব্দটি ব্যবহার করতে অনেকে ভয় পায়, কিন্তু আজ তা ব্যবহার করতেই হচ্ছে। জাতিসংঘের স্বাধীন কমিশনও নিশ্চিত করেছে এই অপরাধ।’
চীনের রাষ্ট্রদূত ফু কং বলেন, ‘আমরা গভীরভাবে হতাশ। বারবার নিরাপত্তা পরিষদ পদক্ষেপ নিতে চেষ্টা করেছে, আর প্রতিবারই যুক্তরাষ্ট্র তা আটকেছে। আমরা প্রশ্ন করি- আর কত নিরপরাধের প্রাণ গেলে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে?’
আরও পড়ুন:
২৫ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস
ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ক্রিস্টিনা মার্কুস ল্যাসেন জানান, তাদের ভোট ছিল শান্তির পক্ষে। বলেন, ‘একটি মানবসৃষ্ট বিপর্যয় থামানোর জন্য, অবিলম্বে ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতির জন্যই আমাদের ভোট।’