‘সরকার পক্ষপাতিত্ব করলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়’
নির্বাচনকালীন সরকার যদি পক্ষপাতিত্ব করে, সে ক্ষেত্রে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ও টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। তিনি আরও বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো যদি সুষ্ঠু নির্বাচন না চায়, তাহলে নিরপেক্ষ নির্বাচন করা কঠিন হবে। এজন্য নির্বাচনে পর্যবেক্ষক ও গণমাধ্যমকর্মীদের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা জরুরি।’
আজ শুক্রবার ঢাকার টিআইবি কার্যালয়ে রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি (আরএফইডি)-এর সাংবাদিকদের জন্য আয়োজিত নির্বাচনী সংবাদ প্রতিবেদন প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে সাংবাদিকদের ভোটকেন্দ্রে প্রবেশাধিকার অবশ্যই সুরক্ষিত রাখতে হবে বলে জানান ড. ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন সংক্রান্ত আইন ও নীতিমালায় কিছু পরিবর্তন আনা হলেও প্রত্যাশিত সংস্কার এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। বিশেষ করে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকারে যে শর্ত আরোপ করা হয়েছে, তা ঝুঁকি তৈরি করছে।এ বাধা অপসারণ করা দরকার।’
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
তবে সেটি না হলেও সাংবাদিকদের নিজেদের অবস্থান থেকে, আইন ও নীতিমালার মধ্যে থেকে, সম্মিলিতভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে বলে জানান টিআইবির নির্বাহী পরিচালক।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এই সদস্য বলেন, ‘বাংলাদেশের শাসন ব্যবস্থা দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতিকরণ ও প্রতিষ্ঠান দুর্বলকরণের মধ্য দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে প্রশাসনের পেশাদারিত্ব ও নিরপেক্ষতা নষ্ট হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে একটি দলীয় প্রভাবকে আরেকটি দলীয় প্রভাব দিয়ে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। তবে প্রশাসনে এখনো কিছু কর্মকর্তা আছেন যারা নিরপেক্ষ থেকে পেশাগতভাবে কাজ করার চেষ্টা করছেন।’
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
তিনি বলেন, প্রশাসনে এখন তিন ধরনের শক্তি সক্রিয়-একদলীয় প্রভাবশালী গোষ্ঠী, প্রতিস্থাপিত দলীয় গোষ্ঠী এবং নিরপেক্ষ থাকতে চাওয়া একটি ছোট পেশাজীবী গোষ্ঠী। নির্বাচন এই টানাপোড়েনের মধ্যেই অনুষ্ঠিত হবে।
হঠাৎ করে পুরো প্রশাসন পরিবর্তন করা সম্ভব নয় জানিয়ে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘সময় নিয়ে ধীরে ধীরে স্থিতিশীলতা ও পেশাদারিত্ব গড়ে তুলতে হবে। সংস্কার কমিশনগুলোর দেওয়া সুপারিশ এখনো পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি। অল্প কিছু অগ্রগতি হলেও তা যথেষ্ট নয়।এসব দুর্বলতা মাথায় রেখেই সাংবাদিকদের কাজ করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কোথায় আইন প্রয়োগ হচ্ছে, কোথায় ভোটারদের অধিকার নিশ্চিত হচ্ছে এবং কোথায় ব্যর্থতা ঘটছে-সেগুলো তুলে ধরা সাংবাদিকদের দায়িত্ব। একই সঙ্গে এটি তাদের আইনগত অধিকার ও কর্তব্য। আমরা যদি নিরপেক্ষভাবে, সত্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদন তৈরি করি এবং স্বচ্ছতার দাবি অব্যাহত রাখি, তাহলে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আনার সুযোগ তৈরি করা সম্ভব।’