বিজিবিতে চাকরি পেলেন ফেলানীর ছোট ভাই

নিজস্ব প্রতিবেদক, কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট প্রতিনিধি
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০০:০০
শেয়ার :
বিজিবিতে চাকরি পেলেন ফেলানীর ছোট ভাই

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে নিহত কিশোরী ফেলানী খাতুনের ছোট ভাই আরফান হোসেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশে (বিজিবি) চাকরি পেয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে যোগ দেন তিনি। এর আগে গত বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হয়। এ সময় তাঁর বাবা নুর ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

মাত্র ১৫ বছর বয়সী ফেলানী ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারিতে বিএসএফের গুলিতে নিহত হন। তাঁর মরদেহ ঝুলে ছিল কাঁটাতারের বেড়ায়। এই ছবি দেশ-বিদেশে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। দীর্ঘদিন ধরে ন্যায়বিচারের দাবিতে লড়াই করে আসছে পরিবারটি।

ফেলানীদের বাড়ি কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের দক্ষিণ রামখানা কলোনিটারী গ্রামে। বিজিবিতে যোগ দেওয়া ছোট ভাই আরফান হোসেন এইচএসসি পাস করেছেন। পরিবারের আরও দুই ভাই জাহান উদ্দিন পড়ছেন অনার্সে ও আক্কাস আলী পড়ছেন এইচএসসিতে। এ ছাড়া অপর দুই বোন মালেকা খাতুন ও কাজলী আক্তারের বিয়ে হয়েছে। বাবা নুর ইসলাম পেশায় দিনমজুর, মা জাহানারা বেগম গৃহিণী।

আরফান হোসেন গত ২৩ ফেব্রুয়ারি লালমনিরহাট ব্যাটালিয়ন (১৫ বিজিবি) আয়োজিত নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হন। এরপর গত বুধবার তাঁকে নিয়ে নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হয়। আরফান বলেন, ফেলানী হত্যার পর মানুষ যে প্রতিবাদ জানিয়েছিল, তখন থেকেই আমাদের ইচ্ছা ছিল বিজিবিতে যোগ দেওয়ার। আজ সেই স্বপ্ন পুরন হলো।

ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম বলেন, ভারত থেকে ফেরার পথে আমার নাবালিকা মেয়েকে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করে কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলিয়ে রাখে বিএসএফ। সেই দৃশ্য আজও ভুলতে পারিনি। তবে দেশবাসী আর বিজিবি সবসময় আমাদের পাশে ছিল। আজ আমার ছেলে মেধা ও যোগ্যতায় বিজিবিতে সুযোগ পেল। এটা আমার জীবনের বড় প্রাপ্তি।

বিজিবির লালমনিরহাট ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী ইমাম বলেন, ফেলানীর ছোট ভাই নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ১৯ সেপ্টেম্বর (আজ) প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে যোগ দেবে। আমরা বিশ্বাস করি, প্রশিক্ষণ শেষে তিনি একজন দক্ষ সদস্য হিসেবে দেশের সেবায় নিয়োজিত হবেন। তিনি আরও বলেন, ফেলানী হত্যার মতো নৃশংস ঘটনা যাতে আর না ঘটে, সে বিষয়ে বিজিবি সীমান্তে সর্বদা সতর্ক ও সচেষ্ট রয়েছে।