জয়পুরহাটে ছাত্রদলের ৭ নেতাকে বহিষ্কার

জয়পুরহাট প্রতিনিধি
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৩:২৭
শেয়ার :
জয়পুরহাটে ছাত্রদলের ৭ নেতাকে বহিষ্কার

সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে জয়পুরহাট ছাত্রদলের ৭ নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। 

গতকাল বুধবার রাতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।

আর এ বিষয়টি বৃহস্পতিবার সকালে জয়পুরহাটে কর্মরত সাংবাদিকরা সোস্যাল মিডিয়াসহ বিভিন্ন গ্রুপে নিশ্চিত হন।

বহিষ্কৃত নেতারা হলেন জয়পুরহাট জেলা ছাত্রদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, জয়পুরহাট সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সদস্য সচিব পিয়াস আহমেদ পৃথিবী, যুগ্ম আহ্বায়ক সাগর চৌধুরী ও আহাদ হোসেন, জয়পুরহাট শহর ছাত্রদলের সদস্য সচিব হাসানুল বান্না হাসান ও যুগ্ম আহ্বায়ক সোহরাফ হোসেন ইমন এবং শহীদ জিয়া কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল করিম রাকিব।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তাদেরকে বহিষ্কার করা হয়। 

সেখানে আরও উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেন এবং জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের তাদের সঙ্গে কোনো রূপ সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন।

স্থানীয় এই ৭ নেতাকে বহিষ্কারের খবরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছাত্রদলের বর্তমান ও সাবেক নেতাকর্মীরা অনেকেই তাদের মতামত ব্যক্ত করেছেন।

এ বিষয়ে জয়পুরহাট সরকারী কলেজ শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব বহিস্কৃত নেতা পিয়াস আহমেদ পৃথিবী তার ফেসবুক একাউন্টে পরপর দুটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘শুধুমাত্র জয়পুরহাট সরকারি কলেজ ছাত্রদলের কাউন্সিল নিরপেক্ষ ভোটের মাধ্যমে চেয়েছিলাম,পকেট কমিটি বা ভাগাভাগির যে প্রথা তার বিরুদ্ধে গিয়ে। এটাই ছিল আমাদের অপরাধ।’ 

তিনি আরও লিখেন, ‘আন্দোলন সংগ্রামের ভূমিকা দেখে যে নেতারা দিয়েছিল ধন্যবাদ পুরুস্কার, তাদের করা অন্যায়ের বিরুদ্ধে গিয়ে আজ হতে হলো বহিষ্কার। প্রতিহিংসার যে স্ফুলিঙ্গ আজ শুরু হয়েছে, তা খুব তাড়াতাড়ি দাবানল হয়ে ফিরে আসবে ধ্বংসের জন্য। সাম্রাজ্য চিরদিন কারোই থাকে না। মনে রাখবেন দলের দুর্দিনে আমরাই ছিলাম।’

জয়পুরহাট সরকারী কলেজ শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক বহিস্কৃত নেতা সাগর চৌধুরী তার ফেসবুকে লিখেন, ‘৭টি রজনৈতিক মামলা, ২ বার কারাবরণ, বাবার মৃত্যুর দিনও হাইকোর্টে জামিন নিতে গিয়ে শেষ সময় বাবার স্নেহ মায়া থেকে বঞ্চিত, রিমান্ড ও হামলার শিকার অসংখ্য বার, বাসা থেকে ২টা বাইক পুলিশকর্তৃক ছিনতাই। মাসের পর মাস কবরস্থানে রাত্রী যাপন, যার ফলসরূপ আজকের এই প্রতিদান। আশা রাখি দেশ নায়ক জনাব তারেক রহমান জয়পুরহাটের শীর্ষ রজনৈতিক মামলার শিকার ছাত্র নেতাদের মূল্যায়ন করবেন।’

জয়পুরহাট শহীদ জিয়া কলেজ শাখা ছাত্র দলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বহিস্কৃত আরেক নেতা রাকিবুল ইসলাম রাকিব তার ফেসবুকে লিখেন, ‘দীর্ঘ ১০ বছর ধরে দলের হয়ে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি, একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেছি। দুঃসময় দলের অস্তিত্ব রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছি, তারই ধারাবাহিকতায় জয়পুরহাট শহীদ জিয়া ডিগ্রী কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হয়েছিলাম সভাপতি হিসেবে। আর আজ বহিষ্কৃত হলাম দলীয় সুবিধাবাদী লেবাসধারী, মব সৃষ্টিকারী ও সাবেক ছাত্রলীগের আগাছাদের চক্রান্তে এবং নিজের দলের ভেতরে থাকা দলীয় ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায়!’

জয়পুরহাট জেলা ছাত্র দলের সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি তৈয়বুর রহমান রেজা লিখেছেন, ‘জয়পুরহাটে রাজনীতির এক কালো অধ্যায় শুরু। সহপাঠী ত্যাগীদের অবমূল্যায়ন করা হয়েছে।’

এ বিষয়ে জয়পুরহাট জেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রাইসুল আলম রিপন মুঠোফোনে বলেন, ‘কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, তার বাহিরে আমরা যেতে পারব না।’ 

তবে এ ব্যাপারে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মামুনুর রশিদ প্রধানকে মুঠোফোন ও হোয়াটসঅ্যাপে মন্তব্য নিতে চাইলে তিনি তা রিসিভ করেননি।