অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায়ে পুলিশ কর্মকর্তাসহ দুজনের সম্পদ ক্রোক

রংপুর প্রতিনিধি
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২২:৫৬
শেয়ার :
অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায়ে পুলিশ কর্মকর্তাসহ দুজনের সম্পদ ক্রোক

অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় রংপুর নগরীর এক পুলিশ কর্মকর্তার তিনতলা বাড়ি এবং পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সাবেক শিক্ষকের বাড়ি ও মার্কেটসহ এক একর জমি ক্রোক করেছে রংপুর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ বুধবার বিকেলে আদালতের নির্দেশে এ সম্পদ জব্দ করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদক রংপুরের সমন্বিত কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক জয়ন্ত সাহা।

দুদক জানায়, বর্তমানে দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুরে চাকরিরত পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) দুলাল হোসেন রংপুর নগরীর নিউ জুম্মাপাড়ায় তিনতলা বাড়ি নির্মাণ করে পরিবার নিয়ে বাস করছেন এবং ভাড়া দিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে প্রায় দেড় কোটি টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয় বর্হিভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। এ ব্যাপারে ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে একাধিকবার সম্পদের অর্জনের উৎস জানতে চাওয়া হলেও তিনি ওই বাড়ি তৈরি করার প্রয়োজনীয় তথ্য দিতে পারেননি।

অন্যদিকে, একই এলাকায় অবস্থিত আবু হেনা আশিকুর রহমান নামে রংপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সাবেক ইন্সট্রাকটরের বিরুদ্ধে এক একরের বেশি জমিতে মার্কেট, বাড়িসহ অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণ করার অভিযোগ রয়েছে। তিনি প্রায় ৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

এই দুজনের সম্পদ যাতে অন্য কারও কাছে হস্তান্তর করতে না পারেন সে জন্য রংপুরের বিশেষ জজ আদালতে ক্রোক করার আবেদন করা হয়। আদালত তাদের সম্পদ ক্রোক করার আদেশ দেন। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী দুলাল হোসেন ও আবু হেনা আশিকুর রহমানের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ক্রোক করে সাইন বোর্ড ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা হাশেম আলী বলেন, ‘বছরের পর বছর ধরে দেখি সরকারি চাকুরেরা হঠাৎ করেই বহুতল বাড়ি, মার্কেট বানাচ্ছে। অথচ তাদের বৈধ আয় দিয়ে এসব সম্ভব না। দুদক এবার যেভাবে মাঠে নেমেছে, তাতে আশা জাগে দুর্নীতিবাজরা শাস্তি পাবে।’

রংপুর দুদকের উপসহকারী পরিচালক জয়ন্ত সাহা জানান, ওই দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের সুনির্দিষ্ট অভিযোগে তদন্ত চলছে। সম্পদগুলো যাতে অন্য কারও কাছে হস্তান্তর করতে না পারে সে জন্য আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী ক্রোক করা হয়েছে।

‎প্রসঙ্গত ‎সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবৈধ সম্পদ অর্জন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের বিরুদ্ধে দুদক সারা দেশে অভিযান পরিচালনা করছে। সম্প্রতি রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায় একাধিক শিক্ষক, পুলিশ কর্মকর্তা ও প্রকৌশলীর সম্পদ জব্দ করেছে সংস্থাটি। দুদক কর্মকর্তারা জানান, রংপুরের অভিযুক্ত দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ হলে অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে। এরপর আদালতে নিয়মিত বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে।