স্বচ্ছতা আনতে অনলাইনে হবে প্রকল্পের টেন্ডার, আগামী সপ্তাহেই গেজেট
স্বচ্ছতা আনতে সব প্রকল্পের টেন্ডার প্রক্রিয়া অনলাইনে করা হবে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ। তিনি বলেছেন, ‘আগামী সপ্তাহেই এ সংক্রান্ত আইন গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে।’
আজ বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা পরবর্তী ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান।
অনিয়ম ও অস্বচ্ছতা দূর করতে এখন থেকে সব প্রকল্পের টেন্ডার প্রক্রিয়া অনলাইনে হবে জানিয়ে পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, ‘এই আইন হলে রেলখাত, জ্বালানিসহ বিভিন্ন খাতে গুটিকয়েক মাফিয়া প্রতিষ্ঠানের আধিপত্য বন্ধ হবে।’
ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘কারো প্রভাব দেখে নয়, যোগ্যতা আছে এমন প্রতিষ্ঠানকে মূল্যায়ন করেই কাজ দেওয়া হবে। কোনো প্রতিষ্ঠান ঋণ খেলাপি হলে, আগে কোনো অনিয়মে জড়িত হলে, সেই প্রতিষ্ঠানকে দরপত্রে যোগ্য হিসেবে বিবেচনা করা হবে না।’
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
প্রকল্প বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার নানা স্তরে স্বচ্ছতা আনার ক্ষেত্রে সরকার নীরব বিপ্লব করে ফেলেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধ করেছি। ফলে প্রকল্প পরিচালক হতে কর্মকর্তারা কেউ আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।’
এ ছাড়া এখন থেকে প্রকল্প বাস্তবায়নে খাস জমি রেখে কৃষিজমি অধিগ্রহণ করা হবে না জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘সরকারের বহু খাস জমি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। সরকারের উপদেষ্টাদের নিয়ে একটা কমিটি করা হয়েছে। এই কমিটি সারা দেশে কি পরিমাণ সরকারি জমি খাস আছে, তা বের করবে। একই সঙ্গে জমিগুলো দখল হয়েছে কি না, সেসব তথ্য সংগ্রহ করে দুমাসের মধ্যে প্রতিবেদন দেবে।’
উপদেষ্টা জানান, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নে ধীরগতি কেন, তা খতিয়ে দেখতে আগামী সপ্তাহে বৈঠকে বসবে সরকার। এলডিসি উত্তোরণ হলে সহজ শর্তে আর ঋণ পাওয়া যাবে না। তাই ভালো প্রকল্পের জন্য শেষ সুযোগ হিসেবে যতটা পারা যায়, সহজ শর্তে ঋণ নিতে চায় সরকার।
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
এদিকে, জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ৮ হাজার ৩৩৩ কোটি টাকার ১৩ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
পরিকল্পনা কমিশন চত্বরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধান উপদেষ্টা ও একনেকের চেয়ারপারসন ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়।
সভা শেষে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়। এতে বলা হয়, জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় ৮ হাজার ৩৩৩ কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয় সম্বলিত ১৩টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৪ হাজার ৪৩৭ কোটি ৮২ লাখ টাকা, প্রকল্প ঋণ ১ হাজার ২২৫ কোটি ৩৬ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ২ হাজার ৬৭০ কোটি ৯ লাখ টাকা।
উল্লেখ্য, এটি চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের তৃতীয় ও অন্তর্বর্তী সরকারের ১৪তম একনেক সভা।