নেপালে ৬ মাসের মধ্যে সুষ্ঠু নির্বাচন করে মুক্তি চাই

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:৩৯
শেয়ার :
নেপালে ৬ মাসের মধ্যে সুষ্ঠু নির্বাচন করে মুক্তি চাই

নেপালে ছয় মাসের মধ্যে সুষ্ঠু নির্বাচন করে দায়িত্ব থেকে মুক্তি চান বলে জানিয়েছেন দেশটির অন্তর্বতীকালীন প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কি। দায়িত্ব নেওয়ার পর বিবিসিকে দেওয়া প্রথম সাক্ষাৎকারে তিনি এ তথ্য জানান। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাক্ষাৎকারে ছয় মাসের মধ্যে সুষ্ঠু নির্বাচন, জেন জি-র আন্দোলন চলাকালীন হত্যা ও সহিংসতার তদন্ত এবং আগের সরকারের ব্যাপক দুর্নীতির তদন্তসহ নানা বিষয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কি।

বিবিসি তার কাছে জানতে চেয়েছিল, নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হয়েছে ২০২৬ সালের ৫ মার্চ। সময়মতো অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনা করার ক্ষেত্রে কী কী চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে হবে আপনাকে?

এর জবাবে নেপালের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি তো বলেছি যে আমি দিনে ১৮ ঘণ্টা কাজ করব। আপনি জানেন যে সাধারণ মানুষের দিক থেকে কতটা চাপের মুখে এই সরকার গঠিত হয়েছে। আমি আমার দায়িত্ব ছয় মাসের মধ্যে শেষ করে পদ থেকে সরে যেতে চাই।’

তিনি বলেন, ‘আগামী কয়েক দিনে নির্বাচন কমিশনকে সক্রিয় করে তুলব আমরা। প্রথমত ভোটার তালিকা প্রস্তুত করতে হবে তাদের। একটা পুরনো ভোটার তালিকা আছে তাদের, কিন্তু সেটা হালনাগাদ করতে হবে। যদি দিনরাত কাজ করতে পারি তাহলে ছয় মাসে সেটা করা সম্ভব।’

‘যেদিন আমি ক্ষমতা হস্তান্তর করে দেব, সেদিন থেকে আমি মুক্ত’, যোগ করেন সুশীলা কার্কি। 

দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে কমিশন গঠনের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘প্রথমেই আমরা ১০-১১ সদস্যের মন্ত্রিসভা গঠন করব।কয়েক দিনের মধ্যেই এই কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে।’

তিনি বলেন, ‘কী আকারে দুর্নীতি হয়েছে, সেটা আগে জানা প্রয়োজন। আমরা যদি তদন্ত শুরু করতে পারি, পরবর্তী সরকারও সেই কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে পার। আমাদের মনে হয় দুর্নীতির বিরুদ্ধে যতক্ষণ না তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, ততদিন পর্যন্ত এই জাতি শান্তি পাবে না। আমরা নিশ্চিতভাবেই এটা (দুর্নীতির বিরুদ্ধে তদন্ত) করব।’

জেন জি আন্দোলনের সময় সম্পত্তি ও প্রাণহানির ঘটনাগুলোর তদন্তে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের কমিশন করছে সরকার। এ ব্যাপারে নেপালের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান মন্ত্রীসভায় আমরা মাত্র চারজন সদস্য আছি। আমাদের হাতে সময় রয়েছে ছয় মাস। এই ছয়টি মাসকে আমরা যতটা সম্ভব কাজে লাগাতে চাই। আমাদের পরিকল্পনা হলো ওই তদন্ত এক মাসের মধ্যে শেষ করার, বা বড় জোর দেড় মাস। বিভিন্ন ক্ষেত্রের তিনজন বিশেষজ্ঞকে দিয়ে এই তদন্ত চালানো হবে।’

মন্ত্রীসভার সম্প্রসারণ নিয়ে পরিকল্পনা কী জানতে চাইলে সুশীলা কার্কি বলেন, দলীয় নেতাদের তিনি অন্তর্ভুক্ত করবেন না। তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি বলেছিলেন রাজনৈতিক দল থেকে প্রতিনিধি নিতে। কিন্তু আমি চাই স্বতন্ত্র, অরাজনৈতিক মানুষদের।’

মন্ত্রীসভায় শুধুই অরাজনৈতিক ব্যক্তিরা কেন? এর জবাবে তিনি বলেন, আদিবাসী, দলিত, নারী ও অনগ্রসর শ্রেণি থেকে সদস্য আনতে চাই। নির্বাচনের আগে যেন মন্ত্রিসভা রাজনৈতিক সুবিধা না নেয়, সেটিই মূল লক্ষ্য।

জেন জি আন্দোলনের একটি অংশ ইতিমধ্যেই নতুন সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। এ প্রসঙ্গে কার্কি বলেন, ‘আমরা তো পদ চাইনি। ছাত্রদের হত্যার পর আমরা মনঃক্ষুণ্ণ হয়ে দুর্নীতি আর সুশাসনের অভাব দূর করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। সব দাবি হয়তো পূরণ করতে পারব না, তবে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।’