ন্যাটোর মতো সামরিক জোট তৈরি করছে মুসলিম দেশগুলো?
ইসরায়েল কাতারে হামলা করার এক সপ্তাহের মধ্যেই কাতারের রাজধানী দোহায় আরব লীগের সদস্য দেশগুলোর পাশাপাশি কয়েকটি মুসলিম দেশ সম্মেলন করেছে। ৯ সেপ্টেম্বর কাতারে ইসরায়েলের হামলা চালানোকে কেন্দ্র করে মুসলিম দেশের নেতাদের দুই দিনের এই জরুরি সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্য গাজায় প্রায় দুই বছর ধরে চলতে থাকা যুদ্ধ ও চলমান মানবিক বিপর্যয় থামাতে ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিকভাবে চাপ প্রয়োগ করা।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর নিরাপত্তা, ইসরায়েলের আগ্রাসনের মত বিষয়গুলো নিয়েও আলোচনা হয়েছে এই সম্মেলনে। আর এই সম্মেলন থেকে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর আদলে ‘জয়েন্ট আরব ফোর্সেস’ বা যৌথ আরব বাহিনী গঠনের তাগিদ উঠে এসেছে বলে খবর প্রকাশ করেছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদ সংস্থাগুলো।
গতকাল সোমবার শুরু হওয়া আরব-ইসলামিক সম্মেলনে মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি এই যৌথ আরব বাহিনী গঠনের প্রস্তাব তোলেন। এই বাহিনী গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে ন্যাটো জোটের আদলে। অর্থাৎ ন্যাটো জোটভুক্ত প্রত্যেকটি দেশ যেমন জোটের কোনো একটি দেশের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়লে ঐ দেশের নিরাপত্তায় সেনা সহায়তা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, এই যৌথ আরব বাহিনীও সেভাবেই কাজ করবে বলে প্রস্তাব তোলা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
রোগীর পেটে জীবন্ত মাছি!
আরব দেশগুলোর ওপর হামলা হওয়া বা তাদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ার মত ঘটনার পাশাপাশি আরব বিশ্বের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা ও সন্ত্রাসবাদী হামলা ঠেকানোর মত বিষয়গুলো নিয়ে এই বাহিনী কাজ করবে বলে প্রাথমিক প্রস্তাবনায় উঠে এসেছে।
সেনা সদস্যের দিক থেকে মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার সবচেয়ে বড় সামরিক শক্তি মিসর চায় কায়রোতে এই বাহিনীর সদর দপ্তর স্থাপন করতে।
আরও পড়ুন:
২৫ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস
ন্যাটোর মত এই বাহিনীতেও বিমান, নৌ ও স্থল বাহিনী থাকবে বলে প্রস্তাব করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। সহযোগী দেশগুলোর সেনাবাহিনীর সক্ষমতা ও আকৃতির ওপর নির্ভর করবে কোন দেশ এই বাহিনীতে কতটুকু অবদান রাখবে।
বিশ্লেষকরা এই প্রয়াসকে ‘আরব ন্যাটো’ বলে উল্লেখ করছেন।
আরও পড়ুন:
২৫ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস
এর আগে ২০১৫ সালেও মিশর একই ধাঁচের যৌথ আরব বাহিনী গঠনের আহ্বান জানিয়েছিল। সেসময় ইয়েমেন, লিবিয়া, সিরিয়ার মত দেশগুলোতে বিভিন্ন ইসলামপন্থী সশস্ত্র গ্রুপের বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যক্রম রোধে ঐ বাহিনী গঠনের প্রস্তাব জানিয়েছিলেন সিসি। তবে আরব লিগের বেশ কয়েকটি দেশ সেসময় ঐ বাহিনী গঠনে আগ্রহী না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত সেই যৌথ বাহিনী গঠন সম্পন্ন হয়নি।