কোম্পানীগঞ্জে সিএনজি স্ট্যান্ডে চাঁদা না দেওয়ায় সংঘর্ষ
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় নোয়াখালী জেলা বেবি টেক্সি, অটো টেম্পু, অটোরিক্সা চালক ও সহকারী ইউনিয়ন অবৈধ দখলদার শ্রমিক সংগঠন ‘জিপি’র নামে চাঁদা না দেওয়ায় শ্রমিকদের সঙ্গে চাঁদা আদায়কারীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৭ জন আহত হন।
গতকাল সোমবার সকালে বসুরহাট জিরো পয়েন্ট, মুছাপুরের বাংলাবাজার সিএনজি স্ট্যান্ডে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও রাজনৈতিক নেতাদের হস্তক্ষেপে পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে।
আহত সিএনজি শ্রমিক নেতারা হলেন ওয়াসিম, মোহাম্মদ মিয়া, ধনা মিয়া, এমদাদ হোসেনসহ কমপক্ষে ৭ জন।
অভিযোগে জানা যায়, নোয়াখালী জেলা বেবি টেক্সি, অটো টেম্পু, অটোরিক্সা চালক ও সহকারী ইউনিয়ন (রেজিঃ নং-চট্ট-২০৪২) নামের শ্রমিক সংগঠন মাসুদুর রহমান, বেলাল হোসেন ও শিপন দীর্ঘদিন যাবত অবৈধভাবে জিপির নামে কোটি কোটি টাকা চাঁদা আদায় করেন। এটি গত ১৫-১৬ বছর আওয়ামী লীগ সমর্থিত শ্রমিক সংগঠন ছিল। ৫ আগস্ট গণ অভ্যাত্থানের পর মো. জয়নাল আবদীন, আবুল মোবারক বাহার, বেলাল হোসেন ও ফেরদৌস আম্মেদ সেলিমের নেতৃত্বে এই শ্রমিক সংগঠনের অফিসের তালা ভেঙ্গে জবর দখলে নেওয়া হয়। তারা অবৈধ দখলদার থেকে উপজেলার ৩-৪ হাজার সিএনজি থেকে প্রতিদিন ২৫ টাকা হারে জিপির নামে চাঁদা আদায় করে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাত করে আসছেন। এ সব অনিয়ম নিয়ে ক্ষোভের কারণে সোমবার সকালে বিক্ষুব্ধ একদল সিএনজি চালক শ্রমিকরা বসুরহাট জিরো পয়েন্টে এসে জিপির নামে চাঁদা নেওয়া বন্ধ করলে সংঘর্ষ বেধে যায়। এ সংঘর্ষ উপজেলার বাংলাবাজার সিএনজি স্ট্যান্ডেও ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে সংঘর্ষে ২ জন শ্রমিক আহত হন। সংবাদ পেয়ে পুলিশ ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এ সময় আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর সকালে বসুরহাট শ্রমিক ইউনিয়ন কার্যালয় বৈঠকের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের আশ্বাসের পর বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা শান্ত হন।
এর আগে একই বিষয়ে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের পক্ষ থেকে মো. রিপন নামে একজন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী, সেনা ক্যাম্প ও থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়ার পরও কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা জিপির নামে চাঁদা নেওয়া বন্ধ করে দেন। এর পরেই এ ঘটনা সংঘর্ষের রূপ নেয়।
একই শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক নেতা আবুল বাসার ও শ্রমিক মো. রিপন জানান, পূর্বেকার শ্রমিক ইউনিয়নের কমিটিও অবৈধ ছিল। তারা শ্রমিকদের কোটি কোটি টাকা আত্মাসাত করে চলে যান। ৫ আগস্ট গণ অভ্যাত্থানের পর বর্তমানে অবৈধ দখলদারেরা প্রতি মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা চাঁদা আদায় করে কোনো হিসাব দিচ্ছেন না। মৃত শ্রমিকদের জন্য নির্ধারিত টাকাও তাদের পরিবারকে দেওয়া হচ্ছে না। এসব কারণে শ্রমিকরা ক্রমান্বয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দখলদার শ্রমিক ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি মো. জয়নাল আবদীন বলেন, ‘আমাদের কমিটি বৈধ এবং জিপি নেওয়াও বৈধ। কোনো ধরনের চাঁদাবাজি ও সংঘর্ষের বিষয়ে আমি কিছ্ইু জানি না।’
একই বিষয়ে জানতে চাইলে কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) বিমল কর্মকার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, সংঘর্ষের সংবাদ পেয়ে পুলিশ ফোর্সসহ আমি এবং বসুরহাট পৌরসভা জামায়াতের আমীর মাওলানা মোশাররফ হোসাইন ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করি। এ ঘটনায় আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর বৈঠকের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’