বহিরাগতদের হামলায় আহত বাকৃবির ২ শিক্ষার্থী

বাকৃবি প্রতিনিধি
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০:২২
শেয়ার :
বহিরাগতদের হামলায় আহত বাকৃবির ২ শিক্ষার্থী


 

বাকৃবি প্রতিনিধি

 

ব‌হিরাগতদের মারধরে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) দুই শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তাদের একজন মাথায় আঘাত নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলথ কেয়ার সেন্টারে চিকিৎসা নিয়েছেন।

আজ রবিবার বিকেল ৩টার দিকে শহর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম গেট দিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশের সময় তারা বহিরাগতদের হামলার শিকার হন। আহত দুজন হলেন কৃষি অনুষদের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের স্নাতকোত্তরের ছাত্র রাশিদুল আলম রিফাত এবং ছাত্রী নাহার।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের খেলার মাঠ জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করার দাবিতে এলাকাবাসী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরের রাস্তা ব্যারিকেড দিয়ে অবরোধ ও মানববন্ধন করছিল। এ সময় দুই শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে চাইলে তাদের বাধা দেওয়া হয়। পরে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে এলাকাবাসী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। এতে রাশিদুল মাথায় গুরুতর আঘাত পান এবং বিশ্ববিদ্যালয় হেলথ কেয়ার সেন্টারে চিকিৎসা নেন। ছাত্রী নাহারকেও বেল্ট দিয়ে পেটানো হয়।

রাশিদুল আলম রিফাত বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার সময় দেখি তারা রাস্তা আটকে আন্দোলন করছে। আমি তাদের বললাম, আমরা তো বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে চাই। আপনারা রাস্তা ব্লক করে আন্দোলন করছেন, সেটা করুন, কিন্তু যেন কারও অসুবিধা না হয়। আপনারা আপনাদের দাবিতে আন্দোলন করবেন, আমরা তো বাধা দেব না। এ কথা বলতেই তারা বলে আমি নাকি বেয়াদবি করেছি। এরপর ৬-৭ জন মিলে আমাকে মারতে আসে। আমি তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ড দেখাই, তবুও তারা আমাকে মারধর করে।’

মারধরের শিকার ছাত্রী নাহার বলেন, ‘আমরা একসাথে ছিলাম। তারা রাস্তা আটকে আন্দোলন করলে আমরা খুলে দিতে বলি। তখন রাশিদুলের ওপর হামলা চালানো হয়। আমি ঠেকাতে গেলে তারাও আমাকে বেল্ট দিয়ে মারতে থাকে।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. আবদুল আলীম বলেন, ‘আমরা দোষীদের চিহ্নিত করতে এলাকাবাসীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গায়ে হাত দেওয়া আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। এ ছাড়া যে বিষয় নিয়ে বহিরাগত এলাকাবাসী মানববন্ধন করছে, সেটা গ্রহণযোগ্য নয়। গতকাল আমরা কলেজ কর্তৃপক্ষ ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে আলোচনার মাধ্যমে একটি সমঝোতায় আসার প্রস্তাব দিয়েছিলাম। এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনা করে সুষ্ঠু সমাধানে আসার চেষ্টা করছি। কিন্তু আজকের এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার খবর পেলাম।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বরত এসআই মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘ঘটনার পর থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় তারা ফিরে গেছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুলিশ ঘটনাস্থলে রয়েছে। এই ঘটনায় দোষীদের আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

উল্লেখ্য, এর আগে গত ৩১ আগস্ট রাত পৌনে ৮টায় কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবিতে আন্দোলনকারীদের ওপর দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায় বহিরাগতরা। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনের আশেপাশে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের ওপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালানো হয়। এ সময় কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের শব্দও শোনা যায়। এই ঘটনার রেশ না কাটতেই আবারও বাকৃবির দুই শিক্ষার্থীর ওপর বহিরাগতদের হামলার ঘটনা ঘটল।