কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রোববার সকালে নেয়া হবে ফরিদা পারভীনের মরদেহ

নিজস্ব প্রতিবেদক
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০২:৫৫
শেয়ার :
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রোববার সকালে নেয়া হবে ফরিদা পারভীনের মরদেহ

বরেণ্য লোক ও লালনসঙ্গীত শিল্পী ফরিদা পারভীনের মরদেহ সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদন জন্য রোববার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হবে। শনিবার রাতে শিল্পীর ছেলে ইমাম নাহিল এ তথ্য জানান

গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, মায়ের মরদেহ রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১০টার মধ্যে সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্যে রাখা হবে শহীদ মিনারে।

ইমাম নাহিল জানান, বেলা ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে নেয়া হবে। সেখানে বাদ জোহর প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। 

তিনি বলেন, জানাজার পর মায়ের মরদেহ নিয়ে কুষ্টিয়ার উদ্দেশে রওনা হবো। মায়ের ইচ্ছা অনুযায়ী কুষ্টিয়াতে আমরা তার দাফন সম্পন্ন করবো।

সঙ্গীতশিল্পী ফরিদা পারভীন গতকাল শনিবার রাত সোয়া ১০টায় রাজধানীর মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। ফরিদা পারভীন স্বামী এবং ৪ সন্তান রেখে গেছেন।

দীর্ঘদিন ধরে কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন ফরিদা পারভীন। নিয়মিত ডায়ালাইসিসের অংশ হিসেবে তাকে গত ২ সেপ্টেম্বর মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু ডায়ালাইসিসের পর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। তখন চিকিৎসক হাসপাতালে ভর্তি করানোর পরামর্শ দেন। এর পর থেকে তিনি হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বুধবার অবস্থার অবনতি হলে ভেন্টিলেশনে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অবশেষে চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে তিনি চলে যান না-ফেরার দেশে। 

ফরিদার কণ্ঠে লালন সাঁইয়ের গান মানুষকে ছুঁয়ে চলেছে পাঁচ দশক ধরে, যার নাম হয়েছে লালনের গানের সমার্থক, যাকে বলা হতো লালনের গানের সম্রাজ্ঞী। ফরিদা পারভীনের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে সংগীতাঙ্গনে।

১৯৫৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর নাটোরের সিংড়া থানায় জন্ম নেওয়া ফরিদা পারভীন গানে গানে কাটিয়েছেন ৫৫ বছর। ১৪ বছর বয়সে ১৯৬৮ সালে তার পেশাদার সংগীতজীবন শুরু হয়। ফরিদা পারভীন প্রথমে নজরুলসংগীত, এরপর দেশের গান গেয়ে পরিচিতি পেলেও ১৯৭৩ সালে লালন সংগীতে নিবেদিত হন।  

লালনসংগীতে অবদানের জন্য ১৯৮৭ সালে বাংলাদেশ সরকারের একুশে পদক পান ফরিদা পারভীন। এ ছাড়া ২০০৮ সালে জাপানের ফুকুওয়াকা পুরস্কার লাভ করেন। তার কণ্ঠে বেশ কটি আধুনিক ও দেশের গান জনপ্রিয় হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘এই পদ্মা এই মেঘনা’ ইত্যাদি।