উপদেষ্টার আশ্বাস পল্লী বিদ্যুতের গণছুটি স্থগিত
জনদুর্ভোগ বিবেচনায় এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টার আশ্বাসে গণছুটি কর্মসূচি স্থগিত করেছেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। গতকাল শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ অ্যাসোসিয়েশনের দপ্তর সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মাহবুবুর রহমান। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টার প্রতি আস্থা রেখে সারাদেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীকে কর্মস্থলে যোগদানের জন্য অনুরোধ করেন তিনি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আরইবি-পিবিএস সংস্কারের মাধ্যমে একটি টেকসই বিদ্যুৎ বিতরণ সিস্টেম বিনির্মাণে আমরা ২০২৪ সাল থেকে আন্দোলন শুরু করি। সরকার বিভিন্ন সময়ে একাধিক কমিটি গঠন করলেও পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের অসহযোগিতায় সেটি বাধাগ্রস্ত হয়েছে।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিআরইবির দুঃশাসন ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলেই শুরু হয় মামলা, চাকরিচ্যুত, বরখাস্ত, সংযুক্তসহ নানান ধরনের দমন-পীড়ন। গত ২১ মে থেকে ১৬ দিনব্যাপী আন্দোলনের পর বিদ্যুৎ বিভাগের লিখিত আশ্বাসে ৫ জুন কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৭ জুন বিদ্যুৎ বিভাগ দুটি কমিটি গঠন করে। কিন্তু পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড ওই কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়ন না করে উল্টো সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হয়রানি করে।
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
মাহবুবুর রহমান জানান, আন্দোলনের কারণে এখন পর্যন্ত ১৭২ জনের
নামে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা, ২০ জন কর্মকর্তাকে দীর্ঘদিন জেল খাটানো, ৪০ জনকে বিনা নোটিশে চাকরিচ্যুত, ৮৭ জনকে বরখাস্ত ও সংযুক্ত, সাড়ে ৬ হাজার জনকে শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছে। এ ছাড়া গত ১৭ আগস্ট থেকে ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৮ জনকে বিনা নোটিশে চাকরিচ্যুত ও ২৮ জনকে স্ট্যান্ডরিলিজ পূর্বক বরখাস্ত করা হয়েছে। গত ৩১ আগস্ট থেকে সংকট সমাধানের লক্ষ্যে ৪ দফা দাবিতে ৫ দিন শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়। কিন্তু দমন-পীড়ন বন্ধ না করা ও সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ না নেওয়ায় গত ৭ সেপ্টেম্বর থেকে গণছুটি কর্মসূচি ঘোষণা করতে হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অভিন্ন সার্ভিস কোড বাস্তবায়ন করে পেশাগত বৈষম্য দূর করতে প্রায় দুই বছরের আন্দোলনে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কখনই বিদ্যুৎ সরবরাহ ও গ্রাহক সেবা বন্ধ রাখেনি। বিদ্যমান গণছুটি কর্মসূচিতে ৮০টি সমিতির ৪৫ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে প্রায় ৩৩ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করলেও বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে উপকেন্দ্রগুলো চালু রাখা হয়। বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সরাসরি যোগাযোগের সুযোগ না থাকায় আরইবি কর্তৃক বারবার ভুল তথ্য-উপাত্তের মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিভাগকে বিভ্রান্ত করা হয়।
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
মাহবুবুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বিদ্যমান সমস্যা সমাধানের বিষয়ে বিদ্যুৎ উপদেষ্টার পক্ষ থেকে আন্তরিকভাবে আশ্বস্ত করা হয়েছে। দেশের সামগ্রিক প্রেক্ষাপট ও জনদুর্ভোগ বিবেচনায় বিদ্যমান সংকটের সুষ্ঠু সমাধানের লক্ষ্যে উপদেষ্টার প্রতি আস্থা রেখে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির চলমান গণছুটি কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করা হলো। সমিতির সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে কর্মস্থলে যোগদানের জন্য অনুরোধ করা হলো।