আদিবাসী নারীর কোটি টাকার জমির মালিকানা দাবি
শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে ভুয়া উত্তরাধিকার বানিয়ে ও মিথ্যা মামলা ঠুকে দিয়ে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীভুক্ত গারো আদিবাসী এক নারীর ২ কোটি টাকা মূল্যের প্রায় ৫ একর জমির মালিকানা নিজেদের দখলে নেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে কতিপয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, রাজনৈতিক মামলায় হয়রানি করার হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
সূত্র বলছে, নালিতাবাড়ী উপজেলার ১নং পোড়াগাঁও ইউনিয়নের আন্দারুপাড়া গ্রামের বাসিন্দা গারো আদিবাসী নারী বন্দনা চাম্বুগং ২০২৩ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি ভুমি অবমুক্ত আইন অনুযায়ী উত্তরাধিকার সূত্রে মৃত মিজাজ মারাকের রেখে যাওয়া ‘খ’ তফসিলভুক্ত ৪ একর ৯২ শতক জমির মালিকানা প্রাপ্ত হন এবং তার নাম খারিজ সম্পন্ন করা হয়। তবে, এর আগেই একই এলাকার জালাল উদ্দিন, মাইন উদ্দিন ও আব্দুল খালেক যথাাক্রমে ১৯৮২ ও ১৯৯৪ সালে খুকুমনি সাংমা নামে এক নারীকে ভুয়া উত্তরাধিকার বানিয়ে উক্ত ৪ একর ৯২ শতক জমির মধ্যে ২ একর ৫০ শতক লিখে নেন, যদিও তারা তখন নাম খারিজ সম্পন্ন করেননি। এমনকি পরবর্তী সময়ে ওই দলিল পিবিআই তদন্তে জাল দলিল হিসেবে প্রমাণিত হয়।
বর্তমানে বন্দনার নামে থাকা ৪ একর ৯২ শতক জমির মধ্যে উল্লেখিত ব্যক্তিগণ ২ একর ৫০ শতক ভোগদখল করছেন। এছাড়া বন্দনাকে হয়রাণী করতে সম্প্রতি তারই আত্মীয় জীবিতা মারাককে দিয়ে মিথ্যা মারধর ও টাকা আত্মসাতের মামলা করিয়েছেন। বন্দনাকে রাজনৈতিক মামলায় ফেলে হয়রানির হুমকিও দিচ্ছেন প্রতিপক্ষের লোকজন। এছাড়া জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে চলমান পাল্টাপাল্টি মামলা রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তারা ভিন্নখাতে প্রবাহের চেষ্টা করছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে জমি ক্রেতা মাইন উদ্দিন ও জালাল উদ্দিনের ছেলে আব্দুস সালাম বলেন, ‘আমরা তিনজন মিলে মোট ২ একর ৫০ শতাংশ জমি মিজাজ মারাকের উত্তরাধিকারী লিমি মারাক ও খুকুমণি সাংমার কাছ থেকে সাফ-কবলা ক্রয় করেছি। এ সময় অপর পক্ষ বন্দনা চাম্বুগংয়ের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে জালিয়াতি করে জমি খারিজ করিয়েছেন।’
জমির ক্রেতারা বলেন, ‘গত বছরের ৫ আগস্টের আগে বন্দনা চাম্বুগং আওয়ামী লীগের দলীয় প্রভাব খাটিয়ে তার নামে কাগজপত্র ছাড়াও পিবিআই রিপোর্ট তার পক্ষে নিয়েছেন। বর্তমানে সিআইডির দেওয়া প্রতিবেদন আমাদের পক্ষে রয়েছে।’