উচ্ছিষ্ট খাবার থেকে ‘কালো স্বর্ণ’ তৈরি করছে যুক্তরাষ্ট্র

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৪১
শেয়ার :
উচ্ছিষ্ট খাবার থেকে ‘কালো স্বর্ণ’ তৈরি করছে যুক্তরাষ্ট্র

তরমুজের খোসা, তৈলাক্ত পিৎজার বাক্স কিংবা বাগানের শুকনো পাতা—বেশিরভাগ শহরে এগুলো সরাসরি চলে যায় ডাম্পিং গ্রাউন্ডে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটিতে এসব বর্জ্যই পরিণত হচ্ছে অমূল্য সম্পদ কম্পোস্টে-যাকে বলা হচ্ছে ‘কালো স্বর্ণ’। 

নিউইয়র্ক সিটি ডিপার্টমেন্ট অব স্যানিটেশনের ডেপুটি কমিশনার জেনিফার ম্যাকডনেল বলেন, ‘আমরা দারুণ মানের কম্পোস্ট তৈরি করছি, যা শহরের মাটির উর্বরতা বাড়াতে কাজে লাগানো হচ্ছে।’

স্ট্যাটেন আইল্যান্ড কম্পোস্ট ফ্যাসিলিটিতে প্রতিদিন ১০০ থেকে ১৫০ টন পর্যন্ত জৈব বর্জ্য প্রক্রিয়াজাত করা হয়। শরতের পাতা ঝরার মৌসুমে এ সংখ্যা বেড়ে ২৫০ টন পর্যন্ত পৌঁছে যায়।

প্রথমে বর্জ্যগুলো কেটে ও ছেঁকে বিশেষ চেম্বারে রাখা হয়, যেখানে তাপমাত্রা ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছাড়িয়ে যায়। এত উচ্চ তাপমাত্রায় জীবাণু ও আগাছার বীজ ধ্বংস হয়ে যায়। কয়েক সপ্তাহ ধরে ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক আর পোকামাকড় মিলে এগুলোকে ভেঙে ফেলে। শেষে তৈরি হয় গাঢ়, পুষ্টিকর কম্পোস্ট।

এখন পর্যন্ত নিউইয়র্ক সিটির বাসিন্দাদের মাঝে প্রায় ৬০ লাখ পাউন্ড কম্পোস্ট বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে। স্কুল, কমিউনিটি গার্ডেন আর শহরের সবুজ স্থানগুলোতে এই কম্পোস্ট ব্যবহৃত হচ্ছে। এতে শুধু মাটির গুণমানই বাড়ছে না, বরং ঝড়-বৃষ্টির পানি ব্যবস্থাপনাও সহজ হচ্ছে।

ন্যাশনাল রিসোর্সেস ডিফেন্স কাউন্সিলের তথ্যানুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে গৃহস্থালির বর্জ্যের সবচেয়ে বড় অংশ হলো খাবারের উচ্ছিষ্ট ও বাগানের বর্জ্য। এগুলো যখন সরাসরি ল্যান্ডফিলে যায়, তখন তৈরি হয় মিথেন গ্যাস, যা বৈশ্বিক উষ্ণতার জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।

পরিবেশ বিশেষজ্ঞ এরিক গোল্ডস্টেইন বলেন, ‘জলবায়ু সংকট মোকাবেলা করতে হলে খাবারের উচ্ছিষ্টকে ল্যান্ডফিলে না পাঠিয়ে কম্পোস্টে রূপান্তর করতে হবে।’

শহরের অর্গানিকস কালেকশন প্রোগ্রামের আওতায় সব বাসিন্দাকে খাবারের উচ্ছিষ্ট, ময়লাযুক্ত কাগজ আর বাগানের বর্জ্য আলাদা করে জমা দিতে হয়। যদিও নিয়ম বাস্তবায়ন আপাতত স্থগিত রয়েছে, তবে ২০২৬ সাল থেকে আবার কড়াভাবে কার্যকর করা হবে।