বাকৃবিতে বহিরাগতদের হামলার বিচারের দাবি
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) চলমান আন্দোলনকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের ওপর বহিরাগতদের হামলার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আব্দুল জব্বার মোড়ে ওই মানববন্ধনের আয়োজন করে ভেটেরিনারি ও পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা দ্রুত অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম চালুর দাবিও জানান।
পশুপালন ও ভেটেরিনারি অনুষদের দুই শতাধিক শিক্ষার্থী মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন। এসময় তারা বিভিন্ন স্লোগান ও প্ল্যাকার্ড হাতে প্রতিবাদ জানান। ‘প্রশাসনের কালক্ষেপণ, মানি না মানব না’, ‘প্রশাসনের কালো হাত, ভেঙে দাওয়া গুড়িয়ে দাও’, ‘বহিরাহতের হামলার, বিচার চাই, বিচার চাই’সহ নানা স্লোগান দিতে থাকেন।পাশাপাশি তারা ‘বহিরাগত হামলার বিচার চাই’, ‘দ্রুত অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম চালু করা হোক’, ‘আর কত অপেক্ষা, আর কত কালক্ষেপণ’লিখিত প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে প্রতিবাদ জানান।
আন্দোলনকারী ছাত্র শিবলী সাদী বলেন, 'প্রশাসনের অভিযোগ ছিল আমরা তাদেরকে সহযোগিতা করছি না। তাদের দাবি ছিল অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত মেনে নিলে সিন্ডিকেট সভাসহ বাদ বাকি প্রক্রিয়া আগাবে। আমরা গত ৮ সেপ্টেম্বর ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা সাথে আলোচনার সময় কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছি কিছু শর্তসাপেক্ষে। আমরা প্রশাসনকে কয়েকটি প্রস্তাবনা দিয়েছি, কিন্তু কথা ছিল ৮ সেপ্টেম্বর রাতের মধ্যে প্রসাশন পক্ষ থেকে আমাদেরকে সিদ্ধান্ত জানাবে।’
তিনি বলেন, ‘কবে সিন্ডিকেট মিটিং হবে, টেকনিক্যাল বিষয় কীভাবে আগাবে এসব জানানোর কথা ছিল। তবে তিন দিন অতিবাহিত হলেও প্রশাসন থেকে কোনো সহযোগিতা পাইনি। ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টার সাথে যোগাযোগ করলে জানান আলোচন চলছে এখনো কমপ্লিট সিদ্ধান্তে আসতে পারিনি। আমরা জানছি না কী কারণে প্রশাসন সিদ্ধান্তহীনতায় আছেন। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেশন জটের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।’
পশুপালন অনুষদের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এহসানুল হক হিমেল বলেন, ‘প্রশাসনের সাথে চলমান সংকট উত্তরণে আমরা কয়েক দফা বৈঠক করেছি। সর্বশেষ গত ৮ সেপ্টেম্বরে ৬টি প্রস্তাবনা দিয়েছি প্রশাসনকে। প্রস্তাবনার ২ নম্বর ও ৬ নম্বর দাবি মানার সাপেক্ষে আমরা কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবি মেনে নিয়েছি। প্রশাসন আমাদের জানায় অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত না মানলে সিন্ডিকেট মিটিং হবে না। এদিক অন্য অনুষদের শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেক প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে আমরা কেনো বহিরাগতদের বিষয়ে কথা বলছি না কেন?’
তিনি বরেন, ‘আমাদের দেওয়া প্রস্তাবনায় ২ নম্বর এ আছে বহিরাগতদের বিচারকার্য দৃশ্যমান করতে, বহিরাগতদের অবাধ বিচরণ নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিটি প্রবেশ পথে নিরাপত্তা জোরদারের দাবি জানিয়েছি। কিন্তু তিন দিন অতিবাহিত হয়ে গেলেও প্রশাসন থেকে কোনো বার্তা আমাদের নিকট আসেনি।’
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল হক বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের প্রস্তাবনার প্রেক্ষিতে আলোচনা চলছে। তদন্ত কমিটিসহ বেশ কয়েকটি কমিটির সুপারিশের অপেক্ষায় আছি। খুব দ্রুতই প্রশাসনের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।’
প্রসঙ্গত, 'গত ৩১ আগস্ট কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর বহিরাগতদের হামলায় শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকসহ ১০ আহত হন। এ ঘটনার পর বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল পরবর্তী উদ্ভুত পরিস্থিতিতে রাত সাড়ে ৯টায় অনলাইনে অনুষ্ঠিত জরুরি সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা দিয়েছে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে অবস্থানরত সকল ছাত্র-ছাত্রীদের ১ সেপ্টেম্বর সকাল ৯ টার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ প্রদান করা হয়।