স্বাধীনতা পদক প্রত্যাখ্যান করেছিলেন তিনি

অনলাইন ডেস্ক
০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৪:১৩
শেয়ার :
স্বাধীনতা পদক প্রত্যাখ্যান করেছিলেন তিনি

প্রখ্যাত লেখক, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী এবং রাজনীতিবিদ বদরুদ্দীন উমর মারা গেছেন। আজ রবিবার সকাল ১০টা ৫ মিনিটে তিনি ইন্তেকাল করেন। তার বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর।

জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল হাকিম লালা গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

অনেকেরই হয়তো মনে আছে, জীবদ্দশায় বাংলাদেশের এই অন্যতম চিন্তাবিদ ও লেখক দেশের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান ‘স্বাধীনতা পুরষ্কার’ প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। 

মেরুদণ্ডসম্পন্ন লেখক বুদ্ধিজীবী বদরুদ্দীন উমর। আজকাল একটা পদক পুরস্কার বা গলায় মেডেল ঝোলানোর জন্য কি প্রাণান্তকর চেষ্টা! সে দেশে সে সমাজে তিনি ইস্পাহানি পুরস্কার, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, এমনকি একুশে পদকও প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।

প্রসঙ্গত, এ বছর অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে বদরুদ্দীন উমরকে সর্বচ্চো নাগরিক সম্মাননা দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়।

তবে, গত ৬ মার্চ এক বিবৃতির মাধ্যমে তিনি সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান ‘স্বাধীনতা পুরষ্কার’ প্রত্যাখ্যানের কথা জানিয়ে দেন। 

জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল অবদান ও কৃতিত্বের স্বীকৃতি হিসেবে স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য বদরুদ্দীনসহ ৮ জনের নাম প্রকাশ করা হয়েছিল। তবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণার আগেই এই পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছিলেন বদরুদ্দীন উমর।

বদরুদ্দীন উমর বিবৃতিতে বলেছিলেন, ‘১৯৭৩ সাল থেকে আমাকে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা থেকে পুরষ্কার দেওয়া হয়েছে। আমি সেগুলোর কোনোটি গ্রহণ করিনি। এখন বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমাকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা করেছেন। এজন্য তাদেরকে ধন্যবাদ।’

তিনি বলেছিলেন, ‘তাদের দেওয়া এই পুরস্কারও গ্রহণ করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। এই প্রেস বিবৃতির মাধ্যমে আমি এটা জানিয়ে দিচ্ছি।’

এর আগে ১৯৭২ সালে বদরুদ্দীন উমরকে বাংলা একাডেমি পুরস্কার দেওয়া হলে তিনি তা তাৎক্ষণিক প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। এরপর ১৯৭৪ সালে তিনি ইতিহাস পরিষদের পুরস্কার পেয়েছিলেন। সেটাও প্রত্যাখ্যান করেছিলেন বদরুদ্দীন উমর।

প্রসঙ্গত, স্বাধীনতা পুরস্কার বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার। প্রতিবছর ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে এই পুরস্কার দেওয়া হয়। এ বছর (২০২৫) সম্মাননা প্রাপকদের তালিকায় ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি এম এ জি ওসমানী, বিজ্ঞানী অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম, ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদ, কবি আল মাহমুদ, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের অন্যতম নকশাকার নভেরা আহমেদ, পপসম্রাট আজম খান, আবরার ফাহাদ এবং লেখক ও বুদ্ধিজীবী বদরুদ্দীন উমর।

নিজের জন্ম ও জন্মস্থান নিয়ে ‘আমার জীবন’ গ্রন্থের ভূমিকায় বদরুদ্দীন উমর লিখেলেন, ‘আমার জন্ম হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান শহরে ১৯৩১ সালের ২০ ডিসেম্বর, রবিববার, দুপুর দুটোয়।’

জানা যায়, তার পিতা আবুল হাশিম ভারত উপমহাদেশের অন্যতম খ্যাতনামা রাজনীতিক ছিলেন।

বিশেষভাবে উল্লেখ্য, ষাটের দশকে বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদী আন্দোলন, ধর্ম ও রাজনীতি নিয়ে তার লেখা বইগুলো বাংলাদেশের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।