প্রাথমিকে বৃত্তি পরীক্ষার সিদ্ধান্ত, চালু হচ্ছে মিড ডে মিল

অনলাইন ডেস্ক
০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৪:০০
শেয়ার :
প্রাথমিকে বৃত্তি পরীক্ষার সিদ্ধান্ত, চালু হচ্ছে মিড ডে মিল

প্রাথমিক পর্যায়ে দেড়শো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে মিড-ডে মিল চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার। পাশাপাশি ১৬ বছর পর প্রাথমিকের বৃত্তি পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

আজ রবিবার সচিবালয়ে আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা এসব কথা জানান।

মিড ডে মিল চালুর অগ্রগতি সম্পর্কে উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেন, ‘মিড ডে মিলের কাজ এগোচ্ছে। যা ১৫০টি উপজেলায় শিগগির চালু হয়ে যাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা ডিপিপি তৈরি করলাম, সেটি আগের বিবিএসের রিপোর্ট অনুযায়ী তৈরি হলো। এরপর প্রক্রিয়া মেনে আমরা এটি একনেকে উপস্থাপন করলাম, তখন বিবিএসের নতুন পরিসংখ্যান বের হলো। তখন আমাদের বলা হলো আপনারা এই (নতুন পরিসংখ্যান) অনুযায়ী করেন। একটা জেলার মধ্যে কোন অঞ্চলগুলো বেশি দরিদ্র সেটি তো পরিবর্তন হয়েছে। নতুন করে আবার এটিকে ঠিক করে পাস করাতে হল। এজন্য কিছুটা বিলম্ব হলো।’

উপদেষ্টা বলেন, ‘আর যে প্রক্রিয়াগুলো... প্রকিউরমেন্টে প্রক্রিয়া, ট্রেনিংয়ের বিষয়গুলো, সেগুলো চালু আছে আমরা আশা করি আমরা পারবো।’

তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি সেপ্টেম্বরের শেষ ও অক্টোবরের শুরুতে দেশের ১৫০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় মিড ডে মিল চালু করতে পারবো।’

এর মধ্যে ডিম, মৌসুমি ফল, বিস্কুট, দুধসহ পাঁচ ধরনের খাবার থাকবে বলে জানিয়েছেন উপদেষ্টা।

বিধান রঞ্জন বলেন, ‘বছরে মাত্র ১৮০ দিন প্রাথমিকে ক্লাস হয়। শিক্ষা বহির্ভূত অনেক কাজে শিক্ষকদের ব্যস্ত রাখা হয়। এর ফলে গোটা শিক্ষা ব্যবস্থায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।’

এ সময় শিক্ষা ক্যালেন্ডারে ছুটি কমানো হবে বলেও জানান তিনি।

গণশিক্ষা উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘পরিসংখ্যান ব্যুরোর সবশেষ তথ্য অনুযায়ী দেশের ৭ বছর ও তদূর্ধ্ব জনগোষ্ঠীর সাক্ষরতার হার ৭৭ দশমিক ৯ শতাংশ। ২২ দশমিক ১ শতাংশ জনগোষ্ঠী এখনো নিরক্ষর। যারা কখনো বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়নি বা প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ঝরে পরেছে।’

শিক্ষকদের পদোন্নতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘মামলার জন্য অনেক শিক্ষকে পদন্নোতি দেয়া যাচ্ছে না। ৩২ হাজার শিক্ষক প্রধান শিক্ষক হিসেবে পদোন্নোতি পাওয়ার জন্য অপেক্ষমাণ রয়েছে। তাহলে অনেক নতুন পদ সৃষ্টি হবে।’

বিধান রঞ্জন পোদ্দার বলেন, ‘বেসরকারিতে ক্লাস টু থেকে ফাইভ পর্যন্ত বৃত্তি দেয়। তারা এটাকে প্রচারের অংশ হিসেবে নেয়। ফলে অভিভাবকদের থেকে একটা দাবি আসল বৃত্তি দেওয়ার। এতে করে একটা প্রতিযোগিতা হবে।’

প্রাথমিকে বৃত্তি দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকে যারা পড়ে তাদের অনেকেরই অর্থনৈতিকভাবে তুলনামূলক খারাপ অবস্থান রয়েছে। এই যে ঝরে পড়ার হার বাড়ছে, মূল কারণটা অর্থনৈতিক। ফলে আমরা যদি বৃত্তির মাধ্যমে তাদের আর্থিক প্রণোদনা দিতে পারি, তাহলে হয়তো হাইস্কুলে তাদের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া সহজ হবে। এ কারণে আমরা বৃত্তি চালু করতে যাচ্ছি।’

এদিকে জানা গেছে, ২০০৯ সালে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষা চালু হওয়ায় বৃত্তি পরীক্ষা বন্ধ করে দেওয়া হয়। ২০২২ সালে এটি আবার চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, কিন্তু চালু করা হয়নি। তবে বিকল্প হিসেবে বৃত্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয় মেধাবৃত্তি এছাড়া দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্য চালু রাখা হয় উপবৃত্তি। দীর্ঘদিন পর বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার এই বৃত্তি চালু করতে যাচ্ছে।