শি-পুতিন অমরত্বের পথে হাঁটছেন!

আমাদের সময় ডেস্ক
০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০০:০০
শেয়ার :
শি-পুতিন অমরত্বের পথে হাঁটছেন!

সংবাদমাধ্যম এনবিসি প্রশ্ন তুলেছে, স্বৈরাচার নেতারা যখন একত্রিত হন তখন তারা আসলে কী নিয়ে কথা বলেন? তারা হয়তো বলেন, কীভাবে জীবনকে দীর্ঘ করা যায়, কীভাবে অমরত্ব পাওয়া যায়।

সম্প্রতি চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন এই বিষয় নিয়েই আলোচনায় মেতে ওঠেন। সামরিক কুচকাওয়াজ পরিদর্শনের জন্য তারা যখন বেইজিংয়ের তিয়েনআনমেন স্কয়ারের মঞ্চে উঠেন তখন দুই জনেরই বয়স ৭২। সেই সময় তারা আয়ুষ্কাল নিয়ে বিশে^র অগ্রগতি সম্পর্কে আলোচনা করেন।

শি’র একজন অনুবাদক পুতিনকে রুশ ভাষায় বলতে শোনা যায়, ‘আগে ৭০ বছর পর্যন্ত বাঁচা ছিল বেশ বিরল কিন্তু এখন ৭০ বছর বয়সে আপনি মাত্র শিশু’। জবাবে পুতিনের অনুবাদক ম্যান্ডারিন ভাষায় জানান, ‘জৈবপ্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে মানুষ ক্রমাগত অঙ্গপ্রত্যঙ্গ প্রতিস্থাপন করতে পারবে। একই সঙ্গে বয়সের সঙ্গে সঙ্গে তারা তরুণও থাকতে পারবে, এমনকি একপর্যায়ে তারা অমরত্বও অর্জন করতে সক্ষম হবে।’

শি বলেন, ‘কেউ একজন ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, এই শতাব্দীর শেষ নাগাদ মানুষ হয়তো ১৫০ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারবে।’ তাদের কথোপকথনে অদূরে হাসছিলেন উত্তর কোরিয়ার নেতা ৪১ বছর বয়সী কিম জং উন, তবে তার জন্য আলোচনাটি অনুবাদ করা হয়েছিল কিনা তা স্পষ্ট নয়।

এই কথোপকথনে দুজনই হালকাচালে মন্তব্য করেন। কিন্তু তাদের এই আলোচনার বিশেষ গুরুত্বও রয়েছে। কেননা পুতিন ও শি দুই নেতাই যতদিন সম্ভব পদে আঁকড়ে থাকার আগ্রহ দেখিয়েছেন। ২০১৩ সালে ক্ষমতায় আসা শি ৫ বছর আগে সংবিধান থেকে প্রেসিডেন্টের দুই মেয়াদের সীমা অপসারণ করেছেন। এর মধ্য দিয়ে ২০২৩ সালেই তৃতীয় মেয়াদে ভূষিত হন তিনি, যা চীনা নেতা পরিবর্তনের পরিপন্থি। অন্যদিকে ২০০০ সালে রাশিয়ার ক্ষমতায় আসেন পুতিন। ২০২০ সালে বিতর্কিত গণভোটে জয়লাভ করে সংবিধান সংশোধন করে ২০৩৬ পর্যন্ত ক্ষমতা পাকা করেছেন তিনি। সেই সময় পুতিনের বয়স হবে ৮৩ এবং পিটার দ্য গ্রেটের পর তিনি হবে রাশিয়ার সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী শাসক।

প্রসঙ্গত, দীর্ঘায়ুর প্রতি পুতিনের বিশেষ আগ্রহ রয়েছে। গত বছর রুশ আইনপ্রণেতারা ‘নতুন স্বাস্থ্য সংরক্ষা প্রযুক্তি’ নামে একটি বার্ধক্য বিরোধী গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন যেখানে পুতিন বলেছেন, জাতির নাগরিকদের স্বাস্থ্য সংরক্ষণের ওপর বিশেষ মনোযোগ দেওয়া উচিত। যদিও শি এমন ধারণা পোষণ করেন না, তবু চীনা নেতৃবৃন্দ সাধারণত দীর্ঘ জীবন উপভোগ করেন।

উল্লেখ্য, মানব অঙ্গ-প্রতিস্থাপন নিয়ে বেশ কিছু গবেষণা হয়েছে। তবে এর অগ্রগতি এখনও সীমিত পর্যায়ে। এখন পর্যন্ত কোনো গবেষণা দল সম্পূর্ণ কার্যকর ও প্রতিস্থাপনওয়ালা মানব অঙ্গ তৈরি করতে পারেনি।