যুবদল নেতাকে মারধরের অভিযোগ এনসিপি নেতার বিরুদ্ধে
চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উপজেলা মুখ্য সমন্বয়ক মো. জহির উদ্দিনকে ঘিরে একই দিনে ২টি ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। একদিকে যুবদল নেতাকে তুলে নিয়ে মারধরের অভিযোগ। অন্যদিকে, সাংবাদিকদের সঙ্গে দায়িত্বহীন আচরণের অভিযোগ।
জানা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে লোহাগাড়া সদরের ডায়াবেটিক হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকা থেকে মোহাম্মদ ফারুক হোসেন (৪৫) নামে যুবদল নেতাকে তুলে নিয়ে মারধরের পর ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ ওঠে এনসিপি নেতা জহিরের বিরুদ্ধে।
উল্লেখ্য, ফারুক বান্দরবান জেলার লামা উপজেলার আজিজনগর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবদল সভাপতি।
ভুক্তভোগীর ছেলে ফয়সাল উদ্দিন জানান, অসুস্থ বাবাকে হাসপাতাল থেকে বাড়ি নেওয়ার প্রস্তুতিকালে ৭-৮ জন দুষ্কৃতকারী হঠাৎ হামলা চালায় এবং জোরপূর্বক গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। পরে জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করলে পুলিশ বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পোস্ট অফিস সংলগ্ন এলাকা থেকে তার বাবাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ফারুকের ভগ্নিপতি মো. ইসমাইল হোসেন এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানা যায়।
মারধরের শিকার যুবদল নেতা মোহাম্মদ ফারুক হোসেন। ছবি: সংগৃহীত
আবার একই দিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার একটি রেস্টুরেন্টে জহির উদ্দিন জরুরি সংবাদ সম্মেলনের ডাক দেন। কল ও বার্তা পেয়ে স্থানীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধি সেখানে উপস্থিত হলেও রাত ১টা পর্যন্ত তিনি কোনো বক্তব্য না দেওয়ায় সাংবাদিকরা হতাশ ও ক্ষুব্ধ হয়ে ফিরে যান।
সাংবাদিকদের অভিযোগ, এ ধরনের আচরণ শুধু সময়ের অপচয় নয়, সাংবাদিকতার প্রতি চরম অবমাননা। তাদের মতে, সংবাদ সম্মেলন ডেকে বক্তব্য না দেওয়া দায়িত্বজ্ঞানহীনতা ও সাংবাদিকদের অসম্মানজনক আচরণ।
লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. ফারহানা জানান, আহত ফারুককে আনার পর শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
লোহাগাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আরিফুর রহমান বলেন, ‘অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত চলছে। আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
পৃথক দুটি ঘটনায় লোহাগাড়ার রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে এনসিপি নেতা জহির উদ্দিন বলেন, ‘ফারুক মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। স্থানীয়রা তাকে ইয়াবাসহ আটক করেন। এ বিষয়ে একটি ভিডিওও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। পরে স্থানীয়রা তাকে পুলিশে সোপর্দ করেন।’
তবে, সংবাদ সম্মেলনের ব্যাপারে একাধিকবার চেষ্টা করলেও তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।