তারেক রহমানের মধ্যে জিয়াউর রহমানের প্রতিচ্ছবি দেখছে জনগণ: প্রিন্স

নিজস্ব প্রতিবেদক
০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২১:৩০
শেয়ার :
তারেক রহমানের মধ্যে জিয়াউর রহমানের প্রতিচ্ছবি দেখছে জনগণ: প্রিন্স

জনগণ তারেক রহমানের মধ্যে জিয়াউর রহমানের প্রতিচ্ছবি দেখতে পাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স। আজ বুধবার বিকেলে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের পৌর শহরের ডি এস মাদ্রাসা ময়দানে বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে উপজেলা ও পৌর বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠন আয়োজিত বিশাল জনসমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।

সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন,‘তারেক রহমান আরেক জিয়াউর রহমান। জনগণ তারেক রহমানের মধ্যে জিয়াউর রহমানের প্রতিচ্ছবি দেখতে পাচ্ছে। তারেক রহমানের হাত ধরেই বিএনপি শহিদ জিয়াউর রহমানের অসম্পূর্ণ কাজ সম্পন্ন করবে, দেশের মালিকানা জনগণের হাতে তুলে দেবে।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপি এবং জিয়া পরিবার বাংলাদেশের রাজনীতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। ৪৭ বছরে আপামর জনসাধারণের ভালোবাসা, আস্থা, বিশ্বাসে সিক্ত হলেও হাসিনা, এরশাদসহ আধিপত্যবাদী শক্তি বিএনপি ও জিয়া পরিবারকে বারবার ধ্বংস ও নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছে। কিন্তু জনগণ ততবারই বিএনপি ও জিয়া পরিবারের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে, শক্তি ও সাহস জুগিয়েছে, রক্ষা করেছে। বিএনপি ও জিয়া পরিবার জগনের শক্তিতে বলীয়ান হয়ে ওইসব অপশক্তিকে পরাজিত করেছে।’

বিএনপি নেতা আরও বলেন,‘তারেক রহমানের দুচোখ ভরা স্বপ্ন, দৃষ্টি জুড়ে বাংলাদেশ, বুক ভরা আশা। জনগণের ভাগ্য পরিবর্তন,কর্মসংস্থান, উন্নত ও নিরাপদ জীবন, গণতন্ত্র ও সুশাসন নিশ্চিত করা তার লক্ষ্য । বেগম খালেদা জিয়ার আশীর্বাদ ও পরামর্শে তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি শহিদ জিয়ার নীতি ও আদর্শে আগামীর বিএনপি সরকার গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করে বৈষম্যবিহীন সাম্য ও মানবিক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ইতিবাচক রাষ্ট্র গঠন করবে।’

তিনি জনগণকে আগামী ফেব্রুয়ারি নির্বাচনে ধানের শীষ ভোট দিয়ে বিএনপির বিজয় নিশ্চিত করে তারেক রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়নে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। তিনি বলেন,‘একদিকে গণঅভ্যুত্থানে পতিত ও ফ্যাসিস্ট পালিয়ে যাওয়া এবং দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য। অন্যদিকে, গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া কয়েকটি দল গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।’

তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র ও জনগণের কর্তৃত্ব ও সার্বভৌমত্ব ফিরিয়ে দিতে বিএনপি বদ্ধ পরিকর। এটা বিএনপির ইমানি দায়িত্ব। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এই দায়িত্ব পালনে বিএনপি পিছু হটবে না। বিএনপিতে দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজ, সমাজ বিরোধীদের ঠাঁই হবে না। কেউ যদি বিএনপিকে অপব্যবহার করে আঙুল ফুলে কলা গাছ হতে চান, তাদেরকে, আসসালামু আলাইকুম। যারা বিএনপি করবেন, কিছু পাবার আশায় নয়, দেশ ও জনগণকে দেবার জন্য রাজনীতি করতে হবে।

প্রিন্স বলেন, ‘আমরা শহিদ জিয়া, খালেদা জিয়া, তারেক রহমানের রাজনীতি করি। তাদের রাজনীতি হচ্ছে দেশ, জাতি ও জনকল্যাণে নিবেদিত এবং জাতীয়তাবাদ ও গণতন্ত্রের চেতনায় উদ্ভাসিত। সে কারণেই জীবনকে তুচ্ছ করে দমন, নিপীড়ন, জেল, জুলুম উপেক্ষা করে ফ্যসিবাদের বিরুদ্ধে রাজপথে বুক চিতিয়ে লড়াই করতে পারি। আমরা নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন নয় , জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য রাজনীতি করি।এজন্যই জনগণ বিএনপিকে হৃদয়ের মনি কোঠায় স্থান দিয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সময়ের পরিক্ষায় বিএনপি উত্তীর্ণ। ৪৭ বছরে বহু ঘাত, প্রতিঘাত মোকাবেলা করে বিএনপি দেশপ্রেম ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও জনকল্যাণে কাজ করেছে। দেশ ও জনগণের শত্রুরা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা স্বাধীনতার ঘোষককে হত্যা, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ওপর নির্মম নির্যাতন করে মৃত্যুর দিকে ধাবিত করে বিএনপিকে ধ্বংস করতে চাইলেও বিএনপি বারবার ফিনিক্স পাখির মত ঘুরে দাড়িয়েছে।’

উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আসলাম মিয়া বাবুলের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আবু হাসনাত বদরুল কবিরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে হালুয়াঘাট পৌর বিএনপির আহ্বায়ক হানিফ মোহাম্মদ শাকের উল্লাহ বক্তব্য দেন। এছাড়াও উপজেলা ও পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক, সদস্য এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। দলের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে কেন্দ্রীয় বিএনপির আহ্বানে আজ দেশব্যাপী উপজেলা সদরে বর্ণাঢ্য মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

প্রচণ্ড তাপদাহের মধ্যে সমাবেশের পর বিশাল মিছিল হালুয়াঘাট পৌর শহরের হাসপাতাল, উপজেলা পরিষদ, পুরাতন বাসস্ট্যান্ড, উত্তর বাজার, শহিদ মিনার প্রদক্ষিণ করে হালুয়াঘাট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে শেষ হয়। মিছিলে রঙ-বেরঙের পতাকা হাতে শতশত মহিলা, গারো জাতিগোষ্ঠী ও হিন্দু সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষের উপস্থিতি এবং বিএনপি ও অঙ্গসংঠনের পতাকা হাতে হাজার হাজার নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগণের উপস্থিতি সকলের নজর কাড়ে। বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রের বাজনা, শহিদ জিয়া, বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমান ও ধানের শীষের ছবি, বিভিন্ন রঙের ফায়ার স্মোকের ধোঁয়া মিছিলটিকে বর্ণাঢ্য করে তোলে। মিছিল যখন বিভিন্ন এলাকা দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিল, বিভিন্ন বাসা বাড়ি থেকে মহিলা, শিশু, কিশোর রাস্তায় দাড়িয়ে থাকা বিভিন্ন বয়সের সাধারণ মানুষ হাত নেড়ে, তালি দিয়ে মিছিলকারীদের শুভেচ্ছা জানান।