প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে স্ত্রী-সন্তানকে হত্যা, দুজনের আমৃত্যু কারাদণ্ড
জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে স্ত্রী জাহানারা বেগম ও শিশু আবিরকে (৮) হত্যার অভিযোগে আপন দুই ভাইকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের বাবাকে খালাস দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে কারাদণ্ড পাওয়া আসামিদের ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেন।
আজ বুধবার দুপুর ১২টায় চরফ্যাসন (চৌকি) অতিরিক্ত দায়রা জজ মো. শওকত হোসাইনের আদালত আসামিদের উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেন।
আমৃত্যু কারাদণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন- স্বামী মাহাবুব আলম ও তার ভাই ইব্রাহিম। একই মামলায় খালাস পেলেন তাদের বাবা মান্নান মাঝি।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ২০১৮ সালের ৩ মার্চ হত্যাকণ্ডের ঘটনা ঘটে। আসামিদের পরিবারের সঙ্গে একই গ্রামের মিলন নক্তির জমিজমা নিয়ে পূর্বশত্রুতা ও বিরোধ ছিল। এরই সূত্র ধরে মিলন নক্তিকে ফাঁসিয়ে দেওয়ার জন্য জাহানারাকে হত্যা করে এর দায় মিলনের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করেন মাহাবুব এবং ইব্রাহীম। হত্যার এ ঘটনা একই বিছানায় ঘুমিয়ে থাকা শিশু আবির দেখে ফেলায় তাকেও হত্যা করে লাশ বাড়ির পাশের ডোবায় ফেলে দেন।
পরে জাহানারার বাবা মো. সৈয়দ আলী চৌকিদার বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলাটি প্রথমে তদন্ত করে চরফ্যাশন থানা পুলিশ এবং তদন্ত শেষে ২০১৮ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর তিনজন আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে। বাদীপক্ষ উক্ত তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজি দরখাস্ত দিলে আদালত ডিবি ভোলাকে অধিকতর তদন্তের দায়িত্ব দেন।
অধিকতর তদন্ত শেষেও তিনজন আসামির বিরুদ্ধেই ২০২১ সালের ৩০ জানুয়ারি পুনরায় চার্জশিট দেওয়া হয়। পরে ২০২২ সালের ৬ জানুয়ারি এ মামলায় তিনজন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। পরে আসামিদের মধ্যে আসামি মাহবুব আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।
মামলার রায়ের সময় রাস্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডিশনাল পিপি অ্যাডভোকেট হযরত আলী হিরণ ও আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট ছিদ্দিক মাতাব্বর ও অ্যাডভোকেট মাঈনুল ইসলাম নাবিল সরমান উপস্থিত ছিলেন। ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে আদালতে এ রায় দেন।