১১ বছর পর নেত্রকোনা জেলা বিএনপির নতুন নেতৃত্ব
দীর্ঘ ১১ বছর পর নেত্রকোনা জেলা বিএনপির ত্রিবার্ষিক সম্মেলন হয়েছে। এদিন কাউন্সিলরদের ভোটে নেত্রকোনা জেলা বিএনপি নতুন নেতৃত্ব পেল। প্রত্যক্ষ ভোটে সভাপতি পদে অধ্যাপক ডা. মো. আনোয়ারুল হক ও সাধারণ সম্পাদক পদে ড. রফিকুল ইসলাম হিলালী নির্বাচিত হয়েছেন।
গতকাল শুক্রবার দিবাগত গভীর রাতে ফলাফল ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। এর আগে একইদিন প্রধান অতিথি হিসেবে বেলা ১১টায় দিকে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন তিনি।
নেত্রকোনা জেলা শহরের মোক্তারপাড়া মাঠে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলে। এতে ১ হাজার ৫১৫ জন ভোটার অংশ নেন।
ফলাফল অনুযায়ী জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. আনোয়ারুল হক (ছাতা) ১২৭৫ ভোট পেয়ে সভাপতি নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাডভোকেট মাহফুজুল হক (চেয়ার) পেয়েছেন ২১১ ভোট। সভাপতি পদে মোট ২ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। সাধারণ সম্পাদক পদে (মাছ) ৭৪৬ ভোট পেয়ে জেলা বিএনপির সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সদস্য সচিব ড. রফিকুল ইসলাম হিলালী নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আব্দুল্লাহ আল মামুন খান রনি (গরুর গাড়ি) পেয়েছেন ৭২১ ভোট। তরুণ এ রাজনীতিবিদ মাত্র ২৫ ভোটের ব্যবধানে হেরেছেন। আরেক প্রার্থী জেলা বিএনপির বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক এসএম মনিরুজ্জামান দুদু (ফুটবল) ১৮ ভোট পেয়েছেন। সাধারণ সম্পাদক পদে ৩জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
এ সম্মেলনে নেত্রকোনা বিএনপির ১০টি উপজেলা কমিটি ও ৫টি পৌর কমিটির ১ হাজার ৫১৫ জন কাউন্সিলদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হন নতুন প্রার্থীরা।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ ২০১৪ সালের ২৫ অক্টোবর জেলা বিএনপির ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে কাউন্সিলদের ভোটে বীর মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ উদ্দিন খান সভাপতি ও চিকিৎসক আনোয়ারুল হক সাধারণ সম্পাদক করে জেলা কমিটি গঠিত হয়। পরবর্তী কমিটির অনুমোদন ও বিলুপ্তির পর ৬৭ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে চলে দলটি। এরপর আর সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়নি। এত দিন জেলা বিএনপির কার্যক্রম আহ্বায়ক কমিটির মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছিল।
এ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। এছাড়া বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ আলমগীর হাসান, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, জাতীয় নিবার্হী কমিটির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফুল আলম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. শাহ ওয়ারেছ আলী মামুন, আজিজুল বারী ড্যানি প্রমুখ।
বিজয়ী সভাপতি অধ্যাপক ডা. আনোয়ারুল হক বলেন, ‘ফ্যাসীবাদী শাসনামলে সব আন্দোলন-সংগ্রামে সামনে থেকে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে নেতৃত্ব দিয়েছি। তাই দলের কাউন্সিলরা আমাকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করেছে। তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।’