রজনীকান্তের কুলির জয়জয়কার হোঁচট খেল হৃতিকের ওয়ার
ভারতীয় চলচ্চিত্রের অবিসংবাদিত নেতা রজনীকান্ত। ৭৪ বছর বয়সেও যে থামার পাত্র নন, আবারও প্রমাণ করলেন তিনি। বর্তমানে ভারতের সবচেয়ে বড় বক্স অফিস তারকা। ভারতীয় সিনেমার এক জীবন্ত বিংবদন্তি। চিরযুবা। কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী, ভারতের গ-ি ছাড়িয়ে উপমহাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেতা ‘দ্য গ্রেট রজনীকান্ত’। দক্ষিণী সুপারস্টার হলেও গোটা উপমহাদেশেই ‘থালাইভা’ হিসেবেই দেখা হয় রজনীকান্তকে। আসলেই তিনি সিনেইন্ডাস্ট্রির সেনাপতি। হিন্দি চলচ্চিত্রকে উচ্চতায় পৌঁছানোর কা-ারি তিনি।
‘কুলি’র সঙ্গে একইদিনে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে বলিউডের ‘ওয়ার ২’। যেখানে হৃতিক রোশনের সঙ্গে ছিলেন দক্ষিণী মহাতারকা জুনিয়র এনটিআর। প্রথমদিকে সেয়ানে সেয়ানে লড়াই হলেও সপ্তাহান্তে হৃতিককে পেছনে ফেলে দুরন্ত গতিতে এগিয়ে গেছেন রজনীকান্ত। এনটিআর বলিউডে হৃতিককে সঙ্গ দিলেও ‘কুলি’তে সুপার ক্যামিও হিসেবে দেখা গেছে মিস্টার পারফেকশনিস্ট আমির খানকে। ১০-১২ মিনিটের ক্যামিওতেই শোরগোল ফেলে দেন আমির। আর ‘কুলি’র আগামীর প্রেক্ষাপট রেখে যান। মুক্তির মাত্র ১৪ দিনেই ছবিটি বিশ্বব্যাপী আয় করেছে ৫০১ কোটি রুপি!
চলতি বছরের তৃতীয় ভারতীয় ছবি হিসেবে ৫০০ কোটির ক্লাবে প্রবেশ করেছে ‘কুলি’; এর আগে ‘ছাবা’ ও ‘সাইয়ারা’ এই মাইলফলক ছুঁয়েছিল। তৃতীয় সপ্তাহে এসে কিছুটা ভাটা পড়ায় ৮০০ কোটির যে স্বপ্ন ছিল, এখন তা মনে হচ্ছে সুদূরপরাহত। তবে এরই মধ্যে আয়ে ‘কুলি’ এগিয়ে গেছে ‘ব্রহ্মাস্ত্র ১’ আর ‘কানতারা’র চেয়ে।
আরও পড়ুন:
ওটিটি প্ল্যাটফরম আমার জন্য বেশ লাকি
এর আগে ছবিটি টপকে গিয়েছিল কমল হাসানের সেরা হিট ‘বিক্রম’কে। এখন বিজয় থালাপতির ‘দ্য গ্রেটেস্ট অব অল টাইম’ সিনেমাটি আছে ‘কুলি’র সামনে। সেটিও হাতছোঁয়া দূরত্বে। কুলি মাত্র দুই দিনে ১০০ কোটির গ-ি পেরিয়েছিল, যা প্রথম তামিল ইন্ডাস্ট্রির রেকর্ড। রজনীর ২.০ এবং বিজয়-এর লিও- দুটি সিনেমাই তিন দিনে এই অর্জনে নাম লেখাতে পেরেছিল। এদিকে হৃতিকের ‘ওয়ার-২’ এই পর্যন্ত বক্স অফিস থেকে তুলতে পেরেছে ৩০০ কোটির মতো।
রজনীকান্তের অভিনয় ও স্টাইলে সব সময়ই ফিদা থাকে দর্শককুল। চোখে সানগ্লাস পরার স্টাইল কিংবা মুখে সিগারেট, সঙ্গে দুর্দান্ত সংলাপ- সবকিছুতেই তিনি অনন্য। এই মেগা বাজেট অ্যাকশন থ্রিলারটি প্রযোজনা করেছে সান পিকচার্স। সংগীত পরিচালনা করেন জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী অনিরুদ্ধ রবিচন্দ্রন। লোকেশ কনগরাজের কুলির অন্যতম প্রধান আকর্ষণ এর দুর্ধর্ষ কাস্ট। মুখ্য ভূমিকায় রয়েছেন রজনীকান্ত। আবার দাহা হিসেবে বিশেষ অ্যাপেয়ারেন্স রয়েছে বলিউডের সুপারস্টার আমির খানের। সেই সঙ্গে রয়েছেন মেগাস্টার নাগার্জুন, শ্রুতি হাসান, উপেন্দ্র, সত্যরাজ এবং সৌবিন শাহিরের মতো অভিনেতা-অভিনেত্রীরা। এ ছাড়া কনগরাজের সিগনেচার ফিল্মমেকিং স্টাইল তো রয়েছেই। প্রতিটি মুহূর্তই যেন দর্শকদের মন উদ্বেলিত করে। এর পাশাপাশি থালাইভার ট্রেডমার্ক স্যোয়াগ তো আছেই।
আরও পড়ুন:
ফের জুটি হলেন মম-শ্যামল
সিনেমার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যেন একটি সুনামি। সময় যতই গড়িয়েছে এর কাহিনি দর্শককে ততই পর্দায় বুঁদ করে রাখে। চুয়াত্তরে এসেও যে থালাইভা সব প্রতিরোধ দুমড়ে-মুচড়ে প্রতিশোধ-প্রতিরোধের দেয়াল তুলতে পারেন- তা ‘কুলি’ দেখেই বোঝা যায়। সবচেয়ে বড় কথা, মারকাটারি অ্যাকশন থেকে শুরু করে হাইভোল্টেজ ড্রামার পাশাপাশি সুপারস্টার রজনীকান্তের পারফরম্যান্সের ম্যাজিকে মুগ্ধ ভক্তমন। শুধু তা-ই নয়, অনিরুদ্ধের দারুণ ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর, সিটি বাজানোর মতো মুহূর্ত- সব মিলিয়ে এই ছবি কোনো উৎসবের থেকে কম কিছু নয়।
‘কুলি’র জন্য রজনীকান্ত পারিশ্রমিক হিসেবে নিচ্ছেন ২৮০ কোটি রুপি, যা তাকে এশিয়ার সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত অভিনেতায় পরিণত করেছে। এর আগে তিনি ছিলেন দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমার সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক নেওয়া তারকা। ইতিহাসের সেরা তামিল ছবি হিসেবে এরই মধ্যে বিবেচিত কুলি। আগামীতেও যে রজনীকান্ত সিনেপর্দায় দর্শককে মোহিত করবেন, তা বলাই বাহুল্য।
আরও পড়ুন:
মারা গেলেন পরীমনির নানা