দক্ষিণ ক্যারিবীয় সাগরে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ /
মাদুরোর হুঁশিয়ারি
ভেনেজুয়েলা উপকূলে মাদকবিরোধী অভিযানের নামে যুদ্ধজাহাজ পাঠিয়েছে ওয়াশিংটন। যুক্তরাষ্ট্রের এ পদক্ষেপের পাল্টা জবাবে উপকূলে টহল দেওয়ার জন্য যুদ্ধজাহাজ ও ড্রোন পাঠাচ্ছে ভেনেজুয়েলা।
দেশটির প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা কোনোভাবেই তার দেশ আক্রমণ করতে পারবে না।’
বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ‘ভেনেজুয়েলায় প্রবেশের কোনো উপায় নেই। আমাদের দেশ সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সম্পূর্ণ প্রস্তুত।’
তিনি যুক্তরাষ্ট্রের এ সামরিক অবস্থানকে লাতিন আমেরিকার মাদক চক্রবিরোধী অভিযানের নামে আড়াল করা পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করেন।
আরও পড়ুন:
রোগীর পেটে জীবন্ত মাছি!
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার খবর অনুযায়ী, গত সপ্তাহে ওয়াশিংটন লাতিন আমেরিকার মাদক মোকাবেলায় তিনটি যুদ্ধজাহাজের একটি উভচর স্কোয়াড্রন ভেনেজুয়েলার উপকূলের দিকে পাঠায়।
সংবাদ সংস্থাগুলো জানায়, যুক্তরাষ্ট্র আরও দুটি জাহাজ- একটি গাইডেড মিসাইল ক্রুজার ও একটি পারমাণবিক শক্তিচালিত দ্রুত আক্রমণকারী সাবমেরিন ক্যারিবীয় সাগরে পাঠিয়েছে। মোতায়েনকৃত বাহিনীতে মোট ৪৫০০ মার্কিন সেনা রয়েছে। এর মধ্যে ২২০০ নৌ সেনা সদস্য রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন সম্প্রতি অভিযোগ করেছে, ভেনেজুয়েলার বামপন্থি প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো মাদক চক্রের সঙ্গে জড়িত এবং কোকেন পাচারে ভূমিকা রেখেছেন। এ অভিযোগের পর ওয়াশিংটন মাদুরোকে গ্রেপ্তার বা বিচারের মুখোমুখি করার জন্য ২৫ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করে। পরে তা বাড়িয়ে ৫০ মিলিয়ন ডলার করা হয়।
আরও পড়ুন:
২৫ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস
এছাড়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দিয়োসদাদো কাবেল্লোকে গ্রেপ্তার বা বিচারের মুখোমুখি করার জন্যও ২৫ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, মাদুরো ও তার সরকার ‘কার্টেল দে লস সোলেস’ নামে পরিচিত ভেনেজুয়েলার কোকেন পাচারচক্রের নেতৃত্ব দিচ্ছে, যাকে ওয়াশিংটন সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করেছে। তবে মাদুরো এ অভিযোগ নাকচ করে বলেছেন, তার দেশে সরকার পরিবর্তনের চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র।
নিজের সাপ্তাহিক টেলিভিশন অনুষ্ঠানে মাদুরো দাবি করেন, ভেনেজুয়েলা প্রতিবেশী কলম্বিয়ার মতো কোকা ফসল বা কোকেন উৎপাদনমুক্ত দেশ। তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে নিজেদের দেশের মাদক সেবন নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে অন্যদের দোষারোপ করার জন্য অভিযুক্ত করেন। ওয়াশিংটনের হুমকির মুখে তিন লক্ষাধিক স্থানীয় মিলিশিয়া সদস্যকে জাতীয় নিরাপত্তা জোরদারে প্রস্তুত রেখেছেন। পাশাপাশি ভেনেজুয়েলা-কলম্বিয়া সীমান্তে প্রায় ১৫ হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়েছে, যাতে অপরাধী গোষ্ঠীগুলো, বিশেষ করে মাদক কারবারে জড়িতদের নিয়ন্ত্রণে আনা যায়।
অন্যদিকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী পাদ্রিনো জানিয়েছেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চলে চলমান এক অভিযানে এমন কিছু জাহাজঘাট ভেঙে দেওয়া হয়েছে, যেখানে অপরাধীরা আধা ডুবোজাহাজ ও মাদক পরিবহনের বোট বানানোর চেষ্টা করছিল। জাতিসংঘে ভেনেজুয়েলার মিশন যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপকে ‘শত্রুতামূলক কর্মকাণ্ডের বৃদ্ধি’ ও ‘আঞ্চলিক শান্তি নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকি’ বলে নিন্দা জানিয়েছে।
আরও পড়ুন:
২৫ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস