ধর্ষণ-নির্যাতনে বিপর্যস্ত শৈশব, ৬ মাসে মৃত্যু প্রায় দুই হাজার

নিজস্ব প্রতিবেদক
২৯ আগস্ট ২০২৫, ০০:০০
শেয়ার :
ধর্ষণ-নির্যাতনে বিপর্যস্ত শৈশব, ৬ মাসে মৃত্যু প্রায় দুই হাজার

বাংলাদেশে শিশু নির্যাতনের হার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসেই প্রাণ হারিয়েছে প্রায় দুই হাজার শিশু, ধর্ষণ-নির্যাতনের শিকার হয়েছে আরও কয়েক হাজার। এ পরিস্থিতিতে আইন বাস্তবায়ন, সচেতনতা বৃদ্ধি এবং একটি স্বতন্ত্র শিশু অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠার দাবি তুলেছে সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো।

গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরাম (বিএসএএফ) ও বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদের যৌথ উদ্যোগে এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে (জানুয়ারি-জুন) দেশে শিশু নির্যাতনে ১ হাজার ৯৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। ধর্ষণের শিকার হয়েছে ২ হাজার ৭৪৪ শিশু। বিভিন্ন ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়েছে ২ হাজার ১৫৯ জন। এ ছাড়া শিশু নির্যাতন সংক্রান্ত এক লাখ ৫১ হাজার মামলা এখনও নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আছে। এতে ভুক্তভোগী শিশু ও তাদের পরিবার বড় ধরনের দুর্ভোগে পড়ছে। দেশের পাঁচটি জাতীয় দৈনিক থেকে প্রকাশিত খবর বিশ্লেষণ করে এ পরিসংখ্যান তৈরি করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বিএসএএফের চেয়ারপারসন হামিদুল হক বলেন, এসব নির্যাতন শুধু বাইরে নয়, পরিবারের মধ্যেও ঘটছে। জেলা শহরে শিশু নির্যাতনের ঘটনা বেশি। তাই পরিবার ও স্থানীয় সমাজকে যুক্ত করে সচেতনতা বাড়াতে হবে। স্কুলভিত্তিক প্রচার চালানোও জরুরি। তিনি আরও বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং শিশু আইনের সঠিক বাস্তবায়ন করতে হবে। শিশুর অধিকারকে সবার আগে গুরুত্ব দিতে হবে। অনেক সময় নির্যাতনের শিকাররা সময়মতো সঠিক সহায়তা পায় না। এ ক্ষেত্রেও নজর দিতে হবে।

বিএসএএফের নির্বাহী সদস্য ও নারী উন্নয়ন শক্তির নির্বাহী পরিচালক আফরোজা পারভীন তার উপস্থাপনায় বাংলাদেশে একটি শিশু অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে শিশুদের অধিকার সুরক্ষা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পুষ্টি, নিরাপত্তা ও সামগ্রিক কল্যাণ নিশ্চিত করতে একটি স্বতন্ত্র শিশু অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা অত্যন্ত জরুরি। এ অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শিশুদের জন্য কেন্দ্রীভূত নেতৃত্ব, জবাবদিহিতা এবং সুসংহত নীতি গ্রহণ সম্ভব হবে।

বক্তারা শিশুর ওপর সব ধরনের সহিংসতা বন্ধে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। একই সঙ্গে জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদ পুরোপুরি বাস্তবায়নের দাবি তোলেন। সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের ভাইস চেয়ারপারসন ও বাংলাদেশ মানবাধিকার সাংবাদিক ফোরামের মহাসচিব খায়রুজ্জামান কামাল, বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. মনিরুল আলম, যুগ্ম সম্পাদক নাসির ইকবাল জাদু, বিএসএএফের কোষাধ্যক্ষ ও বিইউকের নির্বাহী পরিচালক কাজী শামসুল আলম প্রমুখ।