টিউবলাইট দিয়ে আঘাত করেছিলেন জালাল, প্রার্থীতা বাতিলের সম্ভাবনা

জবি প্রতিনিধি
২৭ আগস্ট ২০২৫, ১৪:৪২
শেয়ার :
টিউবলাইট দিয়ে আঘাত করেছিলেন জালাল, প্রার্থীতা বাতিলের সম্ভাবনা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের ভিপি প্রার্থী জালাল আহমেদ তার রুমমেট রবিউল ইসলামকে ছুরি দিয়ে নয়, বরং টিউবলাইট ছুঁড়ে মেরে আহত করেছেন। অপরাধমূলক এই কর্মকাণ্ডের জন্য তার প্রার্থিতা বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

আজ বুধবার তার বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় করা হত্যাচেষ্টা মামলার এজহারে এমনটাই জানা গেছে। 

মামলার এজাহারে বলা হয়, জালাল আহমদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৩-২০১৪ সেশনের শিক্ষার্থী। জালাল আহমদ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-২০১৯ সেশনের শিক্ষার্থী মো. রবিউল হক বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের ৪৬২ নং রুমে থেকে লেখাপড়া করে আসছেন। জালাল সিনিয়র শিক্ষার্থী হওয়ায় বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে শিক্ষার্থী মো. রবিউল হককে হলের রুমের ভেতর নানাভাবে হয়রানি করতেন। লেখাপড়া ও ঘুমের বিঘ্ন সৃষ্টি করতেন। রবিউল হক প্রতিবাদ করলে জালাল আহমদ তাকে মারপিট করতেন এবং বিভিন্ন ধরনের হুমকি প্রদান করতেন। বিষয়টি শিক্ষার্থী রবিউল হক আমাদেরকে অবহিত করলে আমরা জালাল আহমদকে শাসন করেছি এবং তাকে হল ছেড়ে দেওয়ার জন্য বলেছি। গতকাল ২৬ আগস্ট রাতে রবিউল হক ৪৬২ নং রুমের ভেতর ঘুমিয়ে পড়েন। রাত সাড়ে ১২টার দিকে জালাল রুমের ভেতরে প্রবেশ করে বৈদ্যুতিক লাইট জ্বালান এবং চেয়ার টানা হেঁচড়া করে বিকট শব্দ করতে শুরু করেন। এর ফলে রবিউল হকের ঘুম ভেঙ্গে যায়।

মামলা এজাহারে আরও বলা হয়, রবিউল জালালকে বলেন, ভাই সকালে আমি লাইব্রেরিতে যাবো। আপনি একটু আস্তে শব্দ করেন। এতে আসামি জালাল আহমদ ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষার্থী রবিউল হকের সঙ্গে তর্কবির্তক শুরু করেন। তর্কবির্তকের এক পর্যায়ে জালাল আহমদ রবিউল হককে কাঠের চেয়ার দিয়ে মাথা লক্ষ্য করে আঘাত করেন। রবিউল হক তার হাত দিয়ে কাঠের চেয়ারের আঘাত প্রতিহত করলেও কাঠের চেয়ারের আঘাতে রবিউল হকের কপালে জখম হয়। পরবর্তীতে জালাল আহমদ পুরাতন টিউবলাইট দিয়ে রবিউল হককে পুনরায় মাথা লক্ষ্য করে আঘাত করেন। রবিউল হক মাথা সরিয়ে নিলে ওই টিউবলাইটের আঘাত তার বুকের বাম পাশে লেগে টিউবলাইট ভেঙ্গে গুরুতর কাটা রক্তাক্ত জখম হয়। পরবর্তীতে আসামি জালাল আহমদ পুনরায় ভাঙ্গা ও ধারাল টিউবলাইট দিয়ে রবিউল হককে আঘাত করলে রবিউল হক তার বাম হাত দিয়ে প্রতিহত করলে বাম হাতে কাটা রক্তাক্ত জখম হয়।

প্রসঙ্গত, রুমমেটকে রক্তাক্ত করার পর নিজেকে রুমে আবদ্ধ করে রাখেন ডাকসু নির্বাচনে ভিপি প্রার্থী জালাল আহমদ। এ সময় হলের অন্য শিক্ষার্থীরা তার রুমের সামনে এসে জড়ো হয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। এরপর দীর্ঘ সময় চেষ্টার পর রাত আড়াইটার দিকে জালালকে রুম বের করে পুলিশে সোপর্দ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এদিকে জালালের বিরুদ্ধে এখনো লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন। 

তিনি বলেন, ‘নির্বাচনী টাস্কফোর্স এটি নিয়ে কাজ করছে। খুব শীঘ্রই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হবে। তবে তার অপরাধের ধরণ অনুযায়ী তার প্রার্থিতা বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’