অক্টোবরে উড়ছে না আন্তর্জাতিক ফ্লাইট

গোলাম সাত্তার রনি
২৭ আগস্ট ২০২৫, ০০:০০
শেয়ার :
অক্টোবরে উড়ছে না আন্তর্জাতিক ফ্লাইট

সরকার কক্সবাজার অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক ঘোষণা দিয়েছে। আগামী ২ অক্টোবর থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালুরও সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে সময়মতো ফ্লাইট চালু নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। দেশি-বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলো জানিয়েছে, প্রস্তুতির জন্য তাদের ৩ থেকে ৬ মাস সময় লাগবে। এ জন্য তারা বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) কাছে সময় চাইছে।

বেবিচকের সদস্য (পরিচালনা ও পরিকল্পনা) এয়ার কমোডর আবু সাঈদ মেহবুব খান বলেন, স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে মিটিং হয়েছে। তাদের মতামত নিয়ে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। জানা গেছে, গত ৩০ জুলাই বেবিচকের সভায় সরকারি-বেসরকারি এয়ারলাইন্সের প্রতিনিধি, ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ, কাস্টমস হাউস কর্তৃপক্ষ এবং বিভিন্ন ব্যাংকের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের প্রতিনিধিরা জানান, তাদের তিনটি বিষয় সামনে রেখে প্রস্তুতি নিতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে

অবকাঠামো ও অন্যান্য সুবিধাদি, ফ্লাইট পরিচালনা ও ট্রায়াঙ্গেল রুট। বিদ্যমান অবকাঠামো সুবিধা দিয়ে তারা আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করতে পারবে। এ ছাড়া বিদ্যমান অভ্যন্তরীণ নেটওয়ার্ক দিয়েই আন্তর্জাতিক রুটের বোর্ডিং চেকিং সম্পন্ন করা সম্ভব।

বিমান বাংলাদেশ জানিয়েছে, বোয়িং ৭৩৭ উড়োজাহাজ দিয়ে ফ্লাইট চালুর পরিকল্পনা আছে। কিন্তু বিমানের বহরে এখন কোনো অতিরিক্ত ৭৩৭ নেই। চারটির মধ্যে একটি নষ্ট, আর বাকি তিনটি ব্যস্ত। নতুন রুট চালুর জন্য বোর্ডের সিদ্ধান্তও লাগবে। তারা আরও জানায়, কক্সবাজার হয়ে ট্রায়াঙ্গেল রুট চালু করাও কঠিন হবে। এখনই নতুন আন্তর্জাতিক সিডিউল পাওয়া প্রায় অসম্ভব।

ইউএস-বাংলা বলেছে, আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালুর আগে বাণিজ্যিক সম্ভাব্যতা যাচাই করতে হবে। এ জন্য অন্তত ৩ মাস সময় দরকার। অন্যান্য বেসরকারি এয়ারলাইন্সও ন্যূনতম ৩ থেকে ৬ মাসের সময়ের প্রয়োজন হবে বলে জানিয়েছে। কাস্টমস জানিয়েছে, নতুন যন্ত্রপাতি আনতে তাদের চার মাস সময় লাগবে। তবে প্রয়োজনে ঢাকা থেকে সাত দিনের মধ্যে স্ক্যানিং মেশিন এনে চালু করা সম্ভব।

এদিকে কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, টার্মিনাল ভবনের কাজ এখনও শেষ হয়নি। অ্যারাইভাল ও ডিপারচার লাউঞ্জ, কনভেয়ার বেল্ট, ইমিগ্রেশন কাউন্টারের কাজ বাকি। রানওয়ে প্রস্তুত আছে। তবে কাজের গতি কম। ফলে অক্টোবরের মধ্যে শেষ হওয়া কঠিন।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ বিভাগের জিএম এবিএম রওশন কবির এবং ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ বিভাগের জিএম কামরুল ইসলাম জানিয়েছেন, পুরো বিষয়টি তারা এখনও স্টাডি করছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার বিমান উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দিন বিমানবন্দরের সার্বিক কাজের অগ্রগতি দেখতে কক্সবাজার যাচ্ছেন। তিনি দায়িত্বশীলদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

২০০৯ থেকে কক্সবাজার বিমানবন্দরের উন্নয়নকাজ শুরু হয়। ২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার ধাপ যোগ হয়। ভৌগোলিকভাবে এটি দক্ষিণ এশিয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সরকার এটিকে আঞ্চলিক হাব হিসেবে গড়ে তুলতে চায়। নিয়ম অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক ঘোষণা দিতে ইন্টারন্যাশনাল সিভিল অ্যাভিয়েশন অথরিটির (আইকাও) শর্ত পূরণ করতে হয়। বাংলাদেশ সরকার সেটি মেনেই কক্সবাজারকে আন্তর্জাতিক ঘোষণা দিয়েছে। গত ৭ আগস্ট বেবিচক এ বিষয়ে আইকাওকে চিঠি দিয়েছে।