কিছু সাংস্কৃতিককর্মী এখনো স্বৈরাচারের জন্য মায়া কান্না করছে: সেলিমা রহমান

অনলাইন ডেস্ক
২৬ আগস্ট ২০২৫, ১৫:৫০
শেয়ার :
কিছু সাংস্কৃতিককর্মী এখনো স্বৈরাচারের জন্য মায়া কান্না করছে: সেলিমা রহমান

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেছেন, ‘দেশের কিছু সাংস্কৃতিককর্মী এখনো স্বৈরাচারের জন্য মায়া কান্না করছে। যাদের সমাজকে সত্য, ন্যায় ও সৌন্দর্যের শিক্ষা দেওয়ার কথা, তারা আজ বিভক্ত হয়ে স্বৈরাচারী সরকারের পক্ষে দাঁড়িয়েছে।’

আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস) আয়োজিত কালচারাল ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে মানববন্ধন কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।

স্বৈরাচারের পক্ষ নেওয়া শিল্পীদের সমালোচনা করে সেলিমা রহমান বলেন, ‘দ্রব্যমূল্যের ভয়াবহ অবস্থায় সিন্ডিকেটের কারণে সাধারণ মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। কারণ, আপনারা তো মানুষকে বিশ্বাস করেন না। আপনারা কীসের শিল্পী? আপনারা সম্পদ গড়ার জন্য সেইদিন কাজ করেছেন। বিভিন্ন রকমভাবে অকল্পনীয় সবকিছু তুলে ধরেছেন, কিন্তু সমাজের যে সত্য কথা, সমাজের যে সুন্দর প্রতিচ্ছবি, সমাজের যে গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা, কোনোটাই আপনারা রাখেননি।’

তিনি বলেন, ‘২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র, যুবক, শ্রমিক, জনতা, নারী-পুরুষ, শিশু সবাই রাস্তায় নেমেছিল। সেদিন শিশুদের হত্যা করা হয়েছে, ছাত্র ভাইদের হত্যা করা হয়েছে। খুন করা হয়েছে। এর দায় স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারকেই নিতে হবে। গণঅভ্যুত্থানের ফলে তারা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে, কিন্তু তারা এখনো ষড়যন্ত্র করছে।’

সেলিমা রহমান বলেন, ‘এই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণায়। তিনি মুক্তিযুদ্ধ করে দেশকে স্বাধীন করেছিলেন। শুধু তাই নয়, রণাঙ্গনে যুদ্ধ করে বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছিলেন। এ দেশকে বেগম খালেদা জিয়া নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি ওই স্বৈরাচার সরকারের কবলে পড়ে মিথ্যা মামলায় গত ১৮ বছর ধরে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন, কিন্তু তিনি কখনো আপস করেননি। তার একটাই কথা, এ দেশের জনগণ আমার সন্তান। আমি মরলে এ দেশেই মরব, সন্তানের অধিকার রক্ষার জন্যই সংগ্রাম করব।’

তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া জেলে যাওয়ার সময় বলে গিয়েছিলেন, ‘‘দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও’’। আজও তিনি গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছেন। তিনি আপস করলে অনেক আগেই সরকারে বসতে পারতেন, কিন্তু তা করেননি। ফলে তিনি আজ মিথ্যা মামলায় জর্জরিত ও নানা অসুখে আক্রান্ত।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘আজ আমাদের সামনে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আছেন। তিনি এই দুঃশাসনের কবলে পড়ে মৃত্যুর মুখ থেকে বিদেশে অবস্থান করছেন, চিকিৎসা শেষে তিনি বাংলাদেশের জনগণকে একত্রিত করে এই আন্দোলনকে সফল নেতৃত্ব দিয়েছেন। আন্দোলন সফল হয়েছে, স্বৈরাচার সরকার পালিয়ে গেছে। পতিত সরকার দানবীয় শাসন চালিয়ে যেতে পারেনি, পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।’

শিল্পীদের উদ্দেশে সেলিমা রহমান বলেন, ‘আপনারা সজাগ হন। আপনারা শিল্পী মানুষ, শিল্পচর্চা করেন, কিন্তু আপনাদের শিল্পচর্চার মাধ্যমে এ দেশের মানুষের সাধারণ জীবন, তাদের চিত্র, তাদের কথা বলার অধিকার তুলে ধরতে হবে। সবসময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকবেন। সেই সোচ্চার হবে জনগণের জন্য, জনগণের অধিকারের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য।’

মানববন্ধন শেষে কর্মসূচি ঘোষণা করেন জাসাসের যুগ্ম আহ্বায়ক ও গীতিকার ইথুন বাবু। তিনি বলেন, ‘আগামী ২১ দিনের মধ্যে শিল্পকলা-সচিবালয় থেকে ফ্যাসিস্টদের সরানো না হলে কঠোর আন্দোলন কর্মসূচিতে যাব।’

মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন সাংস্কৃতিক কর্মী শিবা শানুসহ অভিনয়, নাট্য ও চলচ্চিত্র শিল্পীরা।