ডিবি হাসানকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ
রাজশাহীতে বরখাস্ত হওয়া পুলিশের উপপরিদর্শককে (এসআই) মাহবুব হাসানকে (৩৫) গণপিটুনির পর পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে স্থানীয়রা। তিনি রাজশাহীতে ডিবি হাসান নামেই পরিচিত ছিলেন। গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে নগরীর হজর মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, আওয়ামী সরকারের আমলে আরএমপির ডিবিতে পোস্টিং থাকাকালে তার বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়সহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের বিনা কারণে আটক করে নির্মম নির্যাতন চালাতেন হাসান।
পুলিশ সূত্র জানায়, ২০১৩ সালে নিয়োগ পাওয়া এসআই মাহবুব হাসান প্রথমে মতিহার থানায় এবং পরে ২০১৬ সালে নগর গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) যোগ দেন। শুরু থেকেই তার বিরুদ্ধে বেপরোয়া আচরণ, হয়রানি ও চাঁদাবাজির অভিযোগ ওঠে। ছাত্রজীবনে তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
স্থানীয়রা জানায়, গণপিটুনির পর ডিবি হাসানকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর রাজশাহী মহানগরীর সাংগঠনিক সম্পাদক জসিম উদ্দিন সরকার ও জেলা ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি খাইরুল ইসলাম।
জসিম উদ্দিন সরকার অভিযোগ করে বলেন, ‘ডিবি হাসান তার দায়িত্বকালে বিএনপি-জামায়াতের অসংখ্য নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলায় কারাগারে পাঠান এবং সাধারণ মানুষকেও হয়রানি করেন। আওয়ামী লীগের পোষ্য কর্মী হিসেবে হাসান পুলিশের পোশাকে ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী কার্যক্রম করেছেন। তার ভয়ে তটস্থ থাকতেন অনেক পুলিশ কর্মকর্তাই।’
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ডিবিতে কর্মরত অবস্থায় হাসান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমন, সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেন। নগরীর রেলগেট এলাকার রাজিব আলী রাতুল ও তার পরিবার এ ধরনের হয়রানির শিকার হওয়ার অভিযোগ করেছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী মাসুদ বলেন, ‘আটকের পর হাসানকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চন্দ্রিমা থানায় তার নামে কোনো মামলা নেই। পরে তাকে বোয়ালিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।’
এ বিষয়ে বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘হাসানের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির একটি মামলা রয়েছে। ওই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।’
আরএমপির মুখপাত্র ও উপপুলিশ কমিশনার গাজিউর রহমান বলেন, ‘মাহবুব হাসান সর্বশেষ ডিবিতে কর্মরত ছিলেন। পরবর্তীতে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। তাই তার বিষয়ে এখনও বিস্তারিত জানা নেই।’