বাগেরহাটে ৪ আসন পুনর্বহালের দাবিতে সর্বাত্মক অবরোধ চলছে

মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি
২৪ আগস্ট ২০২৫, ১৩:১৩
শেয়ার :
বাগেরহাটে ৪ আসন পুনর্বহালের দাবিতে সর্বাত্মক অবরোধ চলছে

বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন বহাল রাখার দাবিতে মোংলায় সড়কপথ অবরোধ ও হরতাল শুরু হয়েছে। পূর্বনির্ধারিত সময় আজ রবিবার ভোর ৫টা থেকে মোংলার চাঁদপাই, মাদ্রাসা রোড, কলেজ মোড়, উপজেলা পরিষদ, মোংলা বাসস্ট্যান্ডসহ বিভিন্ন স্থানে সড়কের ওপর গাড়ি ও বাঁশের সাহায্যে ব্যারিকেড দিয়ে সর্বদলীয় সর্বাত্মক অবরোধ চলছে। 

ভোর ৫টা থেকে শুরু হওয়া এ অবরোধ চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। অবরোধের কারণে সড়ক ও নৌপথে সকল ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। অচল হয়ে পড়েছে ইপিজেড, শিল্পকারখানা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, দোকানপাট, খেয়া ও ফেরি পারাপার। বন্দর জেটির কার্যক্রম ও সড়ক পথে পণ্য পরিবহনও বন্ধ রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, আজ ভোর থেকেই রাস্তায় নেমে আসেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ। ফলে কোনো দূরপাল্লার যানবাহন ছেড়ে যায়নি, অভ্যন্তরীণ যান চলাচলও বন্ধ রয়েছে। এতে বাগেরহাট জেলার সঙ্গে অন্য সব স্থানের যোগাযোগ কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী ও দোকানদারেরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে দোকানপাট বন্ধ রেখেছেন।

মোংলা পৌর সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির আহ্বায়ক আলহাজ্ব মো. জুলফিকার আলী বলেন, ‘বাগেরহাটে চারটি আসন বহাল রাখার দাবিতে আমরা গেল ৩০ জুলাই থেকে আন্দোলন করে আসছি। কখনো সংবাদ সম্মেলন, কখনো রাজপথ অবরোধ, আবার নির্বাচন অফিসে অবস্থান কর্মসূচি ও স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। এর পরেও নির্বাচন কমিশন তাদের প্রস্তাব থেকে ফিরে আসেনি। এ কারণে আমরা আজকে সর্বত্র অবরোধ ও হরতালের ডাক দিয়েছি।’ 

তিনি বলেন, ‘সর্বস্তরের জনগণ আমাদের দাবির স্বপক্ষে অবস্থান নিয়ে হরতাল ও অবরোধ সফল করছেন। কোনো দোকানপাট ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খুলছে না। মোংলা বন্দর এলাকারও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।’

অবরোধ সফল করতে ভোর থেকেই মোংলা নদীর খেয়া ও ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে জানিয়ে মোংলা পৌর সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির আহ্বায়ক বলেন, ‘ইপিজেড কার্যক্রমও বন্ধ হয়ে গেছে। সড়কপথে যান চলাচল বন্ধ থাকায় শিল্পকারখানা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সরকারি-বেসরকারি অফিস কার্যত অচল হয়ে পড়েছে।’

শুধুমাত্র জরুরি সেবা চালু রয়েছে বলে জানান মো. জুলফিকার আলী। তিনি বলেন, ‘বাগেরহাট থেকে খুলনা-মাওয়া-ঢাকা রুটও বন্ধ হয়ে পড়েছে। এতে কার্যত সারাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বাগেরহাট। আশা করি, নির্বাচন কমিশন আমাদের দাবি মেনে নেবে। তা না হলে এর থেকে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’

উল্লেখ্য, গেল ৩০ জুলাই নির্বাচন কমিশনের বিশেষ কারিগরি কমিটি বাগেরহাট জেলার চারটি আসন কমিয়ে তিনটি আসন করার প্রস্তাব দিলে জেলার সব রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই প্রস্তাব বাতিল ও চারটি আসন বহাল রাখার দাবিতে আন্দোলন শুরু করে।

এদিকে আসন কমানো অথবা বহাল রাখার বিষয়ে আগামী ২৫ আগস্ট নির্বাচন কমিশনের দপ্তরে শুনানি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।