প্রতিবন্ধীর ৩৩ লাখ টাকা আত্মসাত করলেন সমাজসেবা কর্মকর্তা
নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোজাম্মেল হকের বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধী ও ভিক্ষুক পুনর্বাসন প্রকল্পের তহবিল এবং বিভিন্ন কর্মসূচির ৩৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
এছাড়া নানা অজুহাতে কয়েক লাখ টাকা ঋণ নিয়ে আর ফেরত দেননি বলেও দাবি করেছেন তার অফিসের সহকর্মীরা। এ নিয়ে মোহনগঞ্জজুড়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
গত বৃহস্পতিবার জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক শাহ আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ওই কর্মকর্তা গত ২৭ জুলাই সর্বশেষ অফিস করেছেন। এরপর থেকে তিনি আর কর্মস্থলে অফিস করতে আসছেন না। তার ব্যবহৃত মোঠোফোনও বন্ধ রয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, ওই অফিসের এক কর্মচারীর স্বাক্ষর জাল করে অফিসের ব্যাংক একাউন্টের হিসাব থেকে মোজাম্মেল প্রতিবন্ধী শিক্ষা উপবৃত্তির ৪ লাখ ৭৫ হাজার, মাতৃকেন্দ্রের ঋণ কর্মসূচির ৫ লাখ ১৩ হাজার, ভিক্ষুক পুনর্বাসন প্রকল্পের ১ লাখ ৪০ হাজার ও ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রমের ২২ লাখ ৪৭ হাজার তুলে নেন।
প্রসঙ্গত, সরকার মাতৃকেন্দ্র ঋণ, প্রতিবন্ধী, ভিক্ষুক পুনর্বাসন, ক্ষুদ্রঋণসহ বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য বরাদ্দ দেয়। সেই সব বরাদ্দকৃত টাকা নারী, হতদরিদ্র, ভিক্ষুক পুনর্বাসন খাতে স্বল্পমেয়াদি- দীর্ঘমেয়াদি সহায়তা দেওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তবে এসবের কিছু না করে তিনি ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করে গা ঢাকা দিয়েছেন। জানা গেছে, তিনি মোহনগঞ্জ যোগদানের আগে দুর্গাপুর উপজেলায় দেড় বছর চাকুরী করেন।
এ ঘটনায় নেত্রকোণা জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. হারুন অর রশিদকে আহ্বায়ক ও দুর্গাপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাসুল তালুকদারকে সদস্য করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটি গত ১৪ আগস্ট জেলা কার্যালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
শাহ আলম বলেন, ‘তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে মোজাম্মেল হক ৩৩ লাখ টাকার বেশি অবৈধভাবে উত্তোলন করেছেন। তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে।’
উল্লেখ্য, মোজাম্মেল হক গত বছরের মে মাসে মোহনগঞ্জে যোগদান করেন। এর আগে ২০২২ সালের আগস্ট থেকে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তিনি দুর্গাপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেন।