পুশইন ও সীমান্ত হত্যা বন্ধে জোরালো দাবি জানাবে বিজিবি
ঢাকার পিলখানাস্থ বিজিবি সদর দপ্তরে আগামী ২৫ আগস্ট থেকে শুরু হতে যাচ্ছে চার দিনব্যাপী বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের ৫৬তম সীমান্ত সম্মেলন। চলবে ২৮ আগস্ট পর্যন্ত। সম্মেলনে পুশইন ও সীমান্ত হত্যা বন্ধের জোর দাবি জানাবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
গত ফেব্রুয়ারিতে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) সীমান্ত হত্যা বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। তবে তা কার্যকর হয়নি। এ ছাড়া ওই বৈঠকে আগে সীমান্তে পুশইনের কোনো ঘটনা বিজিবির নজরে আসেনি। ফলে এ বিষয়টি নিয়ে তখন ওই সম্মেলনে কোনো আলোচনা হয়নি। এর তিন মাস পর বিএসএফ পুশইন শুরু করে। এবারে বিজিবি এ বিষয়টিও জোরালোভাবে তুলে ধরবে বলে জানা গেছে।
বিজিবি সূত্র জানিয়েছে, বিএসএফ বিভিন্ন রাজ্য থেকে বাংলাভাষীদের ধরে সীমান্ত দিয়ে জোরপূর্বক বাংলাদেশে ঠেলে দিচ্ছে। ৪ মে থেকে এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যেই দুই হাজারের বেশি মানুষ ঠেলে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১২৬ জন ভারতীয় নাগরিক। সবচেয়ে বেশি ঠেলে দেওয়া হয়েছে মৌলভীবাজার সীমান্ত দিয়ে ৫০২ জনকে। এ ছাড়া লালমনিরহাটে ১২৮, খাগড়াছড়িতে ১৬০, সাতক্ষীরায় ১১০ জনকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
এবারের সম্মেলনে বিজিবি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী। ভারতের পক্ষ থেকে নেতৃত্ব দেবেন বিএসএফ মহাপরিচালক দলজিৎ সিং চৌধুরী। সম্মেলনে সীমান্ত হত্যা ও পুশইনের পাশাপাশি অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধ; ভারত থেকে মাদক, অস্ত্র-গোলাবারুদ ও অন্যান্য চোরাচালান রোধসহ বিভিন্ন আন্তঃসীমান্ত অপরাধ দমন; আন্তর্জাতিক সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকা- বাস্তবায়ন এবং অননুমোদিত অবকাঠামো নির্মাণ রোধ; সীমান্ত নদীর তীর সংরক্ষণ এবং সীমান্ত নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়; সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা বাস্তবায়নে যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ; সাম্প্রতিককালে ভারতীয় মিডিয়ায় বাংলাদেশবিরোধী অপপ্রচারের ফলে সীমান্তে সৃষ্ট উত্তেজনা প্রশমনে উদ্যোগ গ্রহণ; দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক এবং সীমান্ত স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।
ফেব্রুয়ারির বৈঠকে সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোটায় নামানোর দাবি জানানো হয়েছিল বাংলাদেশের পক্ষ থেকে। কিন্তু সীমান্ত হত্যা বন্ধ হয়নি, বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে বেড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিজিবি এবার বিএসএফকে সেই প্রতিশ্রুতি মনে করিয়ে দেবে। এ ছাড়া বাংলাদেশ সীমান্তে ভারতের ফেনসিডিল কারখানা বন্ধ এবং অবকাঠামো ও কাটাতাঁরের বেড়া নির্মাণ বন্ধ করার অনুরোধও উঠবে। সীমান্ত ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের স্বার্থপরিপন্থি সিদ্ধান্ত না নেওয়ার বিষয়টিও উত্থাপন করবে বিজিবি।
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
সম্মেলন উপলক্ষে বিএসএফ প্রতিনিধি দল ২৫ আগস্ট বিকালে পিলখানায় পৌঁছাবে। ২৬ আগস্ট আনুষ্ঠানিক সম্মেলন শুরু হবে। শেষ দিন ২৮ আগস্ট বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেবেন।