‘এআই দিয়ে ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারীদের খুঁজে বের করছে যুক্তরাষ্ট্র’
ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী অভিবাসী এবং অ-মার্কিন নাগরিকদের ওপর নজরদারি চালাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করছে যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল বুধবার যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে শপথ নেওয়ার পর থেকে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আসছে যে তারা ‘উদার’ রাজনীতির প্রতি পক্ষপাতিত্ব করছে এবং কোনো প্রমাণ ছাড়াই তাদের এন্টি সেমেটিক বলে অভিযোগ করেছেন। ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে চলা ফিলিস্তিনিদের পক্ষে ব্যাপক বিক্ষোভ এবং অবস্থান ধর্মঘটকে ‘ইহুদি বিরোধী’ বলে আখ্যা দিয়েছে এবং এতে অংশ নেওয়া বিদেশি শিক্ষার্থী ও অধ্যাপকদের বহিষ্কারের পদক্ষেপ নিয়েছে।
অ্যামনেস্টি অভিযোগ করেছে, যুক্তরাষ্ট্র এই কাজে ‘প্যালানটির’ ও ‘বাবেল স্ট্রিট’ নামের দু’টি প্রতিষ্ঠানের এআই টুল ব্যবহার করছে। এক পর্যালোচনায় সংস্থাটি জানিয়েছে, ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটির নথি থেকে জানা যায়, এই এআই কোম্পানিগুলোর সরবরাহ করা সফটওয়্যার দিয়ে গণ-নজরদারি এবং জনগণকে মূল্যায়ন করা সম্ভব। এর মাধ্যমে প্রায়ই লক্ষ্যবস্তু করা হয় যারা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক নন তাদের।
আরও পড়ুন:
রোগীর পেটে জীবন্ত মাছি!
এরিকা গুয়েভারা-রোসাস নামে মানবাধিকার সংস্থাটির একজন বলেন, ‘ফিলিস্তিনপন্থি মতপ্রকাশ দমন ও গণ-বহিষ্কার কর্মসূচি চালাতে যুক্তরাষ্ট্র সরকার আগ্রাসী এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। এর ফলে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘এর কারণে বেআইনি আটক ও গণ-বহিষ্কারের ঘটনা ঘটছে, যা অভিবাসী এবং বিদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করছে।’
অ্যামনেস্টির গবেষণায় বলা হয়েছে, ‘ক্যাচ অ্যান্ড রিভোক’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে অভিবাসী, শরণার্থী এবং আশ্রয়প্রার্থীদের ওপর নজরদারি করতে যুক্তরাষ্ট্র এই এআই টুল ব্যবহার করছে।
আরও পড়ুন:
২৫ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস
অ্যামনেস্টি জানায়, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এই কর্মসূচির আওতায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নজরদারি, ভিসার অবস্থা পর্যবেক্ষণ ও বিদেশি শিক্ষার্থীদের মতো ভিসাধারীদের ঝুঁকি স্বয়ংক্রিয়ভাবে যাচাই করছে।
গুয়েভারা-রোসাস বলেন, ‘মার্কিন প্রশাসনের দমনমূলক কর্মকৌশল বাস্তবায়নে ‘বাবেল এক্স’ ও প্যালানটিরের ‘ইমিগ্রেশন ওএস’ এর মতো সিস্টেমগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।’ তিনি বলেন, ‘যদি প্যালানটির ও বাবেল স্ট্রিট প্রমাণ করতে না পারে যে তাদের প্রযুক্তির কারণে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে না, তবে তাদের উচিত হবে অভিবাসন বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের সঙ্গে অবিলম্বে কাজ বন্ধ করা।’
আরও পড়ুন:
২৫ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস
অ্যামনেস্টি দাবি করেছে, এই নজরদারি প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষমতা বাড়তে পারে। এতে তিনি চাইলেই ‘প্রান্তিক মানুষদের নির্বিচারে বহিষ্কার’ করতে পারবেন