সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ৩ জনের মৃত্যু
নাটোরের গুরুদাসপুর এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনা ঘটে।
এদিকে গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) একই পরিবারের ৩ জনের মৃত্যুর ঘটনা নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, ময়মনসিংহের আরএফএল গ্রুপে গাড়ি চালকের চাকরী করতেন আনোয়ার হোসেন। স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার সকালে গুরুদাসপুর থেকে ঢাকার আশুলিয়ায় শ্বশুরবাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হন। পথিমধ্যে গাজীপুরের বাসন থানার নাওজোড় এলাকায় রিয়াজ ফিলিং স্টেশনের উত্তরে পৌঁছালে অটোরিকশার পেছনের চাকা খুলে যায়। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেটি কাভার্ডভ্যানের সঙ্গে ধাক্কা খায়। ঘটনাস্থলেই মারা যায় দুই বছরের শিশু কন্যা আন্নি খাতুন। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পথে প্রাণ হারান আনোয়ার ও তার স্ত্রী আঁখি। নিমিষেই শেষ হয়ে যায় হাস্যোজ্জ্বল পরিবারটি।
তারা নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার মকিমপুর গ্রামের বাসিন্দা। ওই গ্রামে এখন শোকের ছায়া বিরাজ করছে। অশ্রুসিক্ত চোখে স্বজনদের আহাজারি চলছে। পরিবারের বড় সন্তান আনোয়ার হোসেন ছিলেন বাবা খলিল হোসেনের একমাত্র ভরসা। পুত্র, পুত্রবধূ আর ফুটফুটে নাতনিকে হারিয়ে শোকে ভেঙে পড়েছেন তার বাবা।
নিহত আনোয়ার ও শিশুকন্যা আন্নি খাতুন। ছবি: সংগৃহীত
নিহত আনোয়ারের বাবা বিলাপ করে বলেন, ‘সংসারটা নিয়ে আমার ছেলে কত স্বপ্ন দেখতো। সবকিছু মুহূর্তে শেষ হয়ে গেল। এখন আমাকে প্রতি মাসে সংসারের খরচ কে দিবে, কে বাবা বলে ডাকবে। ফুটফুটে নাতনীও আর দাদা বলে ডাকবে না। আমার বেঁচে থাকার অবলম্বন একেবারেই হারিয়ে গেল।’ কথাগুলো বলতে বলতে আবারও কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
এদিকে নিহতদের মরদেহ মঙ্গলবার রাতে প্রথমে ঢাকার আশুলিয়ায় নেওয়া হয়। সেখানে জানাজা শেষে গ্রামের বাড়ি গুরুদাসপুরে নিয়ে আসা হয় ভোর রাতে। আজ বুধবার সকাল ১০টায় মকিমপুর গ্রামে তাদের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
বাসন থানার উপপরিদর্শক সানোয়ার হোসেন জানান, দুর্ঘটনায় জড়িত কাভার্ডভ্যান ও অটোরিকশা পুলিশ হেফাজতে আছে।