আমতলী-তালতলী সড়কের বেহাল দশা, চরম ভোগান্তি
বরগুনার আমতলী-তালতলী উপজেলার মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী একমাত্র আঞ্চলিক সড়কটির ৩৮ কিলোমিটার। এর মধ্যে ২৪ কিলোমিটার রাস্তার পিচঢালাই উঠে গেছে। সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য খানাখন্দের। বৃষ্টিতে পানি-কাদায় একাকার। দিন দিন এসব খানাখন্দ বড় আকার ধারণ করছে। এতে প্রতিদিনই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। এমন অবস্থায় ভোগান্তিতে পড়েছে দুই উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ।
জানা যায়, বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কের আমতলীর মানিকঝুড়ি থেকে শুরু করে তালতলীর ফকিরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র পর্যন্ত ৩৮ কিলোমিটার আঞ্চলিক সড়কটির অন্তত ২৪ কিলোমিটার জুড়ে অসংখ্য ডোবা ও বড় বড় খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ যাতায়েত করেন। পাশাপাশি শুভ সন্ধ্যা সমুদ্রসৈকত, নিদ্রারচর সমুদ্রসৈকত, সোনাকাটা ইকোপার্ক, এসব পর্যটন স্পটগুলোতে যাতায়াতের একমাত্র সড়ক এটি। অথচ সড়কের বেহাল দশায় পর্যটকদের যাতায়াত কমেছে। এতে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে।
এছাড়া তালতলী থেকে প্রতিদিন ঢাকার উদ্দেশ্যে বাস, ট্রাক, মাহিন্দ্রাসহ অন্যান্য তিন চাকার যানবাহন চলাচল করে। এসব যানবাহনে প্রতিদিন অসংখ্য যাত্রী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করেন। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন দুই উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মানিকঝুড়ি থেকে কচুপাত্রা সেতু পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার। কড়ইবাড়িয়া বাজার থেকে হরিণবাড়িয়া সেতু পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার। তালতলীর ব্রিজগাট সেতু থেকে ফকিরহাট পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার। এসব এলাকায় প্রতি একটু পর পর ছোট-বড় গর্ত, ইট-পাথর সুরকি উঠে মাটি বের হয়ে গেছে। এখন বৃষ্টির কারণে কাদা-পানিতে বেহাল অবস্থা। এতে ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন। এতে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। তাই সড়কটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
তালতলী সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী মো. মিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘সড়কের বেহাল দশার কারণে আমাদের যাতায়াতে খুবই সমস্যা হচ্ছে। পরীক্ষা চলাকালে নির্ধারিত সময়ে আমরা পরীক্ষা কক্ষে উপস্থিত হতে পারি না। এতে নানা সমস্যায় পড়তে হয়।’
অ্যাম্বুলেন্স চালক মো. কাওছার মিয়া বলেন, ‘রাস্তা এমনই বেহাল, ঝাঁকুনিতে রোগী আরও অসুস্থ পড়েন। বড় বড় গর্ত বৃষ্টির কারণে চোখে পড়ে না। রাতের বেলা গাড়ি চালাতে ভয় লাগে। তাই দ্রুত সড়ক সংস্কারের দাবি জানাই।’
তালতলী ডিলার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু-বকর সিদ্দিক বলেন, ‘সড়কটি সংস্কারের অভাবে খানাখন্দে পরিনত হয়েছে। এতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিভিন্ন বাজারে পরিবেশন করতে বিলম্ব হচ্ছে। এ কারণে পরিবহন খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে।’
এ বিষয়ে বরগুনা কাযালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী (এলজিইডি) মেহেদী হাসান বলেন, ‘আমতলী-তালতলী সড়কটির যে অংশে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ, তা জরুরি মেরামতের জন্য অর্থ বরাদ্দ পেয়েছি। আমরা শিঘ্রই ট্রেন্ডার প্রক্রিয়ায় চলে যাব। ২-৩ সপ্তাহের ভিতরে সংস্কার কাজ শুরু হবে। সড়কটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’